‘চিন ও ভারত একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত’, মন্তব্য করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রীর
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: নয়াদিল্লি সফরে এসে ভারত ও চিনের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের বার্তা দিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দুই দেশের উচিত একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং অংশীদার হিসেবে দেখা।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন ওয়াং ই। বৈঠক শেষে চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পারস্পরিক সুবিধা ও সৌহার্দ্যের ভিত্তিতে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বেইজিং।
চিনা সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াং ই বলেছেন, চিন ও ভারতের উচিত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের গতি ধরে রাখা, সহযোগিতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখা। তিনি মনে করিয়ে দেন, গত বছর কাজানে দুই দেশের নেতাদের বৈঠক সম্পর্কের নতুন ভিত্তি তৈরি করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ে সংলাপ পুনরায় শুরু হওয়ায় ইতিবাচক ধারা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চিন-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে ওয়াং ই বলেন, দুই দেশের উচিত অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সুযোগ হিসেবে একে অপরকে দেখা। তার মতে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা হুমকির দৃষ্টিকোণ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও উন্নয়ন-অভিযাত্রায় সম্পদ ব্যয় করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, বিভ্রান্তি দূর করে সহযোগিতা বাড়ানো গেলে প্রাচীন দুই সভ্যতার পুনর্জাগরণ একে অপরের পরিপূরক হবে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের প্রসঙ্গ টেনে ওয়াং ই বলেন, যখন একপক্ষীয়তা ও আধিপত্যবাদ বিশ্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে, তখন ২৮০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই দুই দেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রায়নেও ভারত-চিনের যৌথ অবদান জরুরি বলে মত দেন তিনি।
অন্যদিকে, বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, স্থিতিশীল, সহযোগিতামূলক ও ভবিষ্যতমুখী সম্পর্ক দুই দেশের স্বার্থেই কার্যকর হবে। তিনি জানান, ৭৫ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে ভারত রাজনৈতিক আস্থা জোরদার করতে, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায়। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি।
চিন ও ভারতের সাম্প্রতিক এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ নজর কেড়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ট্যাক্স নিয়ে নিত্যনতুন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে।


