Thursday, November 27, 2025
Latestদেশ

Chhattisgarh : ছত্তিশগড়ে আত্মসমর্পণ করলেন ৪১ জন মাওবাদী

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ছত্তিশগড়ে মাওবাদী আত্মসমর্পণের ধারা অব্যাহত। বুধবার বিজাপুর জেলায় পুলিশের সামনে আত্মসমর্পণ করলেন ১২ মহিলা-সহ মোট ৪১ জন মাওবাদী। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী ৩২ জনের মাথার মোট পুরস্কারমূল্য ছিল ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, নিরাপত্তা বাহিনীর দমন অভিযান এবং পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতিই এই প্রবণতার কারণ বলে জানাচ্ছে প্রশাসন।

বিজাপুরের পুলিশ সুপার জিতেন্দ্রকুমার যাদব জানান, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন বহুল পরিচিত ও বহু মামলার অভিযুক্ত। তাদের প্রত্যেকের মাথার উপর ঘোষণা ছিল ৮ লক্ষ টাকা পুরস্কার। এরা হলেন— পান্ড্রু হাপকা ওরফে মোহন, বান্দি হাপকা, লক্কু কোরসা, বদরু পুনেম, সুখরাম হেমলা, মঞ্জুলা হেমলা, মঙ্গলি মাডভী ওরফে শান্তি, জয়রাম কাদিয়াম এবং চাঁদোয়ালি।


এরা সকলেই নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)–র বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন, কোম্পানি ও মিলিশিয়া ইউনিটের সদস্য ছিলেন।

এছাড়া আরও তিন জন মাওবাদীর মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ, ১২ জনের উপর ২ লক্ষ এবং আট জনের উপর ১ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা ছিল।

প্রত্যেক আত্মসমর্পণকারীকে সরকারি নীতিমতে ৫০ হাজার টাকা এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সরকারি পুনর্বাসন প্রকল্পই আত্মসমর্পণের উৎসাহ: পুলিশ

ছত্তিশগড় পুলিশের দাবি, শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া অভিযানে নয়, পুনর্বাসন নীতির আকর্ষণও মাওবাদীদের আত্মসমর্পণে বড় ভূমিকা রাখছে। গত বছর শুরু হয়েছিল ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’—গোন্দি ভাষায় যার অর্থ ‘আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ’। এর আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল বহুল আলোচিত ‘লোন ভারাতু’ কর্মসূচি, যার অর্থ—‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’।

মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এই বছরের মার্চে ঘোষণা করেন ‘নকশাল আত্মসমর্পণ ও আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’। এতে আত্মসমর্পণকারীদের জন্য চাকরি, আর্থিক সহায়তা, আইনি সুরক্ষাসহ নানা সুবিধা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, বস্তার পুলিশ রেঞ্জে চলছে ‘পুনা মারঘাম’—সামাজিক পুনঃএকত্রীকরণ অভিযান।

এসপি জিতেন্দ্রকুমারের দাবি, “নিরাপত্তা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান এবং পুনর্বাসন প্রকল্পের সুবিধা—দুটোই আত্মসমর্পণের হিড়িকে উৎসাহিত করছে।”

নেতৃত্বে টানাপড়েন, যৌথ অভিযান — আত্মসমর্পণে প্রভাব

২০২৫ সালে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন শীর্ষ মাওবাদী নেতা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন—

মাওবাদী সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি এবং তার স্ত্রী অরুণা। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকর। পিএলজিএ-র শীর্ষ কমান্ডার মাধভী হিডমা

নতুন সাধারণ সম্পাদক দেবুজি বর্তমানে সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে নেতৃত্বের পরিবর্তন এবং ধারাবাহিক অভিযানের চাপ সংগঠনকে কোণঠাসা করে ফেলেছে।