Zohran Mamdani : নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ নেতা জোহরান মামদানি (Zohran Mamdani)। প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম নিউ ইয়র্কের মেয়র পদে নির্বাচিত হলেন—যা আমেরিকার রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে মামদানি গড়লেন এক শতাব্দীর রেকর্ড। গত ১০০ বছরের ইতিহাসে নিউ ইয়র্কের সবচেয়ে কমবয়সি মেয়র হতে চলেছেন তিনি। আগামী ১ জানুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেবেন।
নির্বাচনে বিপুল জয়
রিপাবলিকান প্রার্থী কুর্টিস স্লিওয়া-কে ভোটে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন মামদানি। তিনি পেয়েছেন মোট ভোটের ৫০ শতাংশেরও বেশি, যেখানে স্লিওয়া পান ১০ শতাংশেরও কম। তৃতীয় স্থানে থাকা প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো পেয়েছেন প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট। এই ফলাফলে স্পষ্ট—নিউ ইয়র্কবাসীর আস্থা এবার তরুণ প্রগতিশীল নেতৃত্বের দিকেই।
পরিবার ও শিকড়
১৯৯১ সালে উগান্ডার কাম্পালা শহরে জন্ম জোহরান মামদানির। তাঁর মা খ্যাতনামা ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার, আর পিতা মাহমুদ মামদানি একজন উগান্ডার বিশিষ্ট লেখক ও অধ্যাপক। মামদানি পরিবারের শিকড় ভারতের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ছোটবেলা থেকেই নিউ ইয়র্ক শহরেই তাঁর বেড়ে ওঠা, শিক্ষালাভ ও রাজনৈতিক পরিপক্কতা।
রাজনৈতিক অবস্থান ও প্রতিশ্রুতি
নিউ ইয়র্ক রাজনীতিতে মামদানি পরিচিত একজন বামঘেঁষা ডেমোক্র্যাট হিসেবে। নির্বাচনী প্রচারে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন—শহরের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ কমানোই হবে তাঁর প্রথম লক্ষ্য। বিশেষ করে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ভাড়াবাড়িতে থাকা বাসিন্দাদের জন্য ভাড়া মকুব ও বাড়িভাড়া স্থিতিশীল রাখার নীতি প্রণয়ন করবেন।
এই প্রতিশ্রুতিই তাঁকে সাধারণ নিউ ইয়র্কবাসীর কাছে আস্থার প্রতীক করে তুলেছে। অনেকে মনে করছেন, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় ও ভাড়া সমস্যায় জর্জরিত শহরের মানুষ মামদানির মধ্যে এক নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন।
বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন—যদি কমিউনিস্ট প্রার্থী জোহরান মামদানি জয়ী হন, তবে নিউ ইয়র্ক সিটির সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই হুমকি উপেক্ষা করেই ভোটাররা নির্বাচিত করেছেন মীরা নায়ারের পুত্রকেই।
ইতিহাসের নতুন অধ্যায়
মামদানির এই জয় শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত, অন্যদিকে মুসলিম পরিচয়ের প্রতিনিধিত্বকারী একজন তরুণ নেতা।


