VB-G RAM G Bill: লোকসভায় পাশ হলো ‘জি রাম জি’ বিল, ‘মহাত্মাকে ভুলে যাওয়া লজ্জার!’ মন্তব্য মমতার
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মনরেগা প্রকল্পের নাম বদলে ‘বিকশিত ভারত–গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ)’ বা সংক্ষেপে ‘জি রাম জি’ বিল লোকসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হলো। বৃহস্পতিবার বিলটি পাশ হওয়ার পর লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন স্পিকার। বিল ঘিরে মহাত্মা গান্ধীর নাম বাদ পড়া এবং রাজ্যগুলির উপর বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপানোর অভিযোগে তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বিরোধী শিবির।
এত দিন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পটি পরিচিত ছিল মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট, ২০০৫ বা মনরেগা নামে। নতুন বিলে গান্ধীর নাম না থাকায় বিরোধীরা একে ‘জাতির জনকের অপমান’ বলে আখ্যা দেয়। বিল অনুযায়ী বছরে কাজের দিন ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ করা হলেও প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৪০ শতাংশ বহনের দায় রাজ্যগুলির উপর চাপানো হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও আপত্তি তুলেছেন বিরোধী সাংসদেরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সংসদ চত্বরে বিক্ষোভে সামিল হন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র সাংসদেরা। গান্ধীর ছবি হাতে নিয়ে ওয়েলে নেমে স্লোগান, বিলের কপি ছেঁড়ার ছবি ধরা পড়ে। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লোকসভা। কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, ডিএমকে-র টিআর বালু এবং সমাজবাদী পার্টির ধর্মেন্দ্র যাদব বিলের বিরোধিতা করে তা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান। তবে বিরোধীদের স্লোগান-বিক্ষোভের মধ্যেই ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ করানো হয়।
বিল নিয়ে বিতর্কে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে তীব্র বাকযুদ্ধ হয় কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের। প্রিয়ঙ্কার কটাক্ষ, “এই সরকারের নাম বদল করার একটা বাতিক রয়েছে।” পাল্টা শিবরাজের দাবি, কংগ্রেসই অতীতে বিভিন্ন প্রকল্পের নাম নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে। তাঁর আরও বক্তব্য, ২০০৫ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে প্রকল্প চালু হলেও ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণেই গান্ধীর নাম যুক্ত করা হয়েছিল।
এদিকে সংসদের বাইরে থেকেও বিলের বিরোধিতা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে শিল্প ও বাণিজ্য সম্মেলন থেকে তিনি বলেন, “মনরেগা থেকেই গান্ধীর নাম বাদ দেওয়া হল! লজ্জা হচ্ছে, জাতির জনককে ভুলে যাচ্ছি আমরা।” একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, রাজ্যের ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পের নাম বদলে মহাত্মা গান্ধীর নামে রাখা হবে। কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “আপনারা গান্ধীকে সম্মান না দিলে আমরা দেব।”
বিরোধীদের অভিযোগ, যথাযথ আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি বিলটি পাশ করানো হয়েছে এবং শুক্রবার শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে রাজ্যসভাতেও একইভাবে বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা হতে পারে। যদিও কেন্দ্রের দাবি, মোদী সরকার গান্ধীর আদর্শ মেনেই ‘কাজের মাধ্যমে উন্নয়ন’-এ বিশ্বাসী।
সব মিলিয়ে, ‘জি রাম জি’ বিল পাশ হলেও গান্ধীর নাম বাদ পড়া এবং রাজ্যগুলির আর্থিক দায় বৃদ্ধি ঘিরে রাজনৈতিক সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট।


