৮ অক্টোবর ভারত সফরে আসছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: আগামী বুধবার (৮ অক্টোবর) দু’দিনের সফরে ভারতে আসছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম ভারত সফর। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভারত-ব্রিটেনের নবস্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির প্রেক্ষাপটে স্টার্মারের এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন স্টার্মার। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আলোচনার মূল বিষয় থাকবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দুই দেশের নাগরিক সমাজের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন। পাশাপাশি দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
বৈঠকের পর মুম্বাইতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে একটি বিশেষ আলোচনাচক্রে অংশ নেবেন স্টার্মার। সেখানে উপস্থিত থাকবেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী এবং নীতিনির্ধারকরা। শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার প্রসঙ্গও আলোচনায় আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই লন্ডনে এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (FTA) ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং কিয়ের স্টার্মার। এই চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ব্রিটেন থেকে আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিমান উপকরণ, চকোলেট, পানীয়, সাজগোজের সামগ্রী, বিস্কুট, গাড়ি, ভেড়া ও স্যামন মাছ ভারতীয় বাজারে অনেক কম দামে পাওয়া যাবে। এইসব পণ্যের শুল্ক গড়ে ১৫ শতাংশ থেকে নেমে তিন শতাংশে দাঁড়াবে। বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্ক আরও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ১১০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে।
ভারতীয় কূটনৈতিক মহলের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের বর্তমান টানাপোড়েন এবং ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য আলোচনার স্থবিরতার মাঝে ব্রিটেনের সঙ্গে এমন এক চুক্তি ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্য। মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, ভারত তার স্বাধীন বাণিজ্যনীতিতে অনড়।
এই প্রেক্ষাপটে কিয়ের স্টার্মারের সফর কেবলমাত্র কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং ভারত-ব্রিটেনের মধ্যে ভবিষ্যতের বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।