Sanae Takaichi : জাপানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন সানায়ে তাকাইচি
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: টোকিওর রাজনীতিতে বড় পালাবদল ঘটতে চলেছে। জাপানের শাসক দল লিবারাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) নতুন নেত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছে সানায়ে তাকাইচিকে। এর ফলে তিনি হতে চলেছেন জাপানের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তবে ৬৪ বছর বয়সী সানায়ের রাজনৈতিক উত্থান ঘিরে উচ্ছ্বাসের চেয়ে বিতর্কই বেশি। সানায়ে অতীতে মহিলাদের অধিকারের পক্ষে আসা বহু সংস্কারমূলক পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন।
ইশিবার ইস্তফা
গত মাসে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ান শিগেরু ইশিবা। এলডিপির মধ্যে গত এক বছর ধরেই তাঁকে নিয়ে অসন্তোষ ছিল। জুলাই মাসে জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় চাপ আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হন ইশিবা। এই পরিস্থিতিতেই নেতৃত্বে আসে সানায়েকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত। এখন তাঁর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটানো এবং অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানো। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণও তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে।
নারীবাদবিরোধী ভাবমূর্তি
প্রধানমন্ত্রী পদে বসার আগে সানায়ের সামনে আরও বড় পরীক্ষা রয়েছে—জাপানের মহিলাদের আস্থা অর্জন করা। বহুদিন ধরেই তিনি মহিলাদের উন্নয়নকল্পে আনা বিলগুলির বিরোধিতা করে এসেছেন। তাঁর মতে, মেয়েদের প্রথম দায়িত্ব ‘ভালো স্ত্রী ও মা’ হওয়া। সমকামী বিবাহের বিরোধিতা থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর আলাদা পদবি ব্যবহারের প্রশ্নেও কট্টর অবস্থান নিয়েছেন তিনি। এই অবস্থানের জেরে মহিলাদের একাংশ আশঙ্কা করছেন, সানায়ের নেতৃত্বে তাঁদের অধিকার সংক্রান্ত লড়াই আরও কঠিন হবে।
দল ও ব্যক্তিজীবনে রক্ষণশীল ভাবমূর্তি
এলডিপিতে মহিলাদের নেতৃত্বে তোলার প্রবণতা তুলনামূলক কম। তাকাইচিও বরাবর দলের পুরুষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তবে কিছু ক্ষেত্রে তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মহিলাদের পক্ষেও কথা বলেছেন। নিজের মেনোপজ সমস্যার কথা প্রকাশ্যে তুলে ধরেছিলেন তিনি। এমনকি মহিলাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে পুরুষদের সচেতন করার দাবি জানিয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে কট্টর হলেও তরুণ বয়সে তিনি ছিলেন একেবারে ভিন্ন মেজাজের—কখনও মেটাল ড্রামার, কখনও বাইক রাইডার।
কঠোর নীতি ও ভবিষ্যতের পথ
তাকাইচি কঠোর অভিবাসন নীতির পক্ষে সওয়াল করছেন। দেশের সামরিক শক্তি বাড়ানোর কথাও জোর দিয়ে বলেছেন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, জাপানের উন্নয়নের স্বার্থে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রক্ষণশীল নীতি মেনে চলবেন।