‘কপালে টিপ, খোঁপায় ফুল দেওয়া যাবে না’, ফরমান জারি কোয়েম্বাটুরের সরকারি স্কুলের খ্রিস্টান প্রধান শিক্ষিকার
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর জেলার সুলুরের কাল্লাপালায়ামে একটি সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দেবা কিরুবা জয়কৃষ্ণন ধর্মীয় বৈষম্য, শারীরিক নির্যাতন এবং হিন্দু সংস্কৃতির চিহ্ন জোর করে নিষিদ্ধ করছেন।
ছাত্রীরা জানিয়েছে, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ওই প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিতভাবে হিন্দু ছাত্রীদের কপালের টিপ, কুমকুম, চন্দন, খোঁপায় ফুল ইত্যাদি খুলে ফেলতে বাধ্য করেন। এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, “টিপ পরে এলে আমাদের মুখ ধুতে বাধ্য করা হয়। অকারণেই মারধর করা হয়।”
একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী দাবি করেছে, শৌচালয় থেকে দেরিতে ফেরার ‘অপরাধে’ তাকে স্টাফরুমে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। যার জেরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রায় ১৫০ জন ছাত্রী থাকলেও স্কুলে ব্যবহারযোগ্য মাত্র একটি শৌচালয় রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
অভিভাবকরাও একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। এক মা জানান, তাঁর মেয়ে বাড়ি ফিরে এসে বলে, জোর করে কপালের টিপ ধুয়ে দেওয়া হয়েছে। আরেক অভিভাবকের অভিযোগ, এক ছাত্রীকে শাস্তি হিসেবে জুতো খুলে খালি পায়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়।
আরও এক ছাত্রী জানায়, “স্কুলে চারটি টয়লেট থাকলেও তিনটি সব সময় নোংরা থাকে। আমরা সবাই একটি টয়লেট ব্যবহার করি। ৫ মিনিট দেরি হলেও প্রধান শিক্ষিকা ডেকে মারধর করেন। সকাল ৭টা থেকে স্পেশাল ক্লাস হয়। ক্লাসের পর খাবার খেতে গেলে তিনি বলেন, ‘খেয়ে কী এমন করবে?’ মার খেয়ে কাঁদলে বলেন, ‘বাড়িতে যেন কিছু না বলি। ছোট বিষয় বড় করিস না।’’
ছাত্রীদের অভিযোগ, এই আচরণ দীর্ঘদিন ধরে চলছে এবং এর ফলে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বিষয়টিকে ‘অস্পৃশ্যতার মতো আচরণ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রীরা জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। তাদের দাবি, প্রধান শিক্ষিকাকে অবিলম্বে পদ থেকে সরানো হোক এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক।
এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত শুরু হতে পারে বলেই প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
তথ্যসূত্র: The Commune


