নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে ঠাকুরবাড়িতে আমরণ অনশন মতুয়াদের
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: এসআইআর ঘিরে রাজ্য রাজনীতি যখন তপ্ত, ঠিক সেই সময় নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মতুয়া সম্প্রদায়। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ৫ নভেম্বর থেকে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এসআইআর চালু হলে রাজ্যের ৯৫ শতাংশ মতুয়ার ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যেতে পারে।
তাঁর আহ্বানে বুধবার দুপুর বারোটা থেকে শুরু হয়েছে অনশন কর্মসূচি। যদিও মমতাবালা ঠাকুর নিজে অনশন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না। জানা গিয়েছে, বিশেষ কাজে বাইরে ছিলেন তিনি। তবে তাঁর অনুগামীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
অনশনকারীদের দাবি কী?
অনশনকারীদের মূল দাবি— নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে মতুয়াদের। তাঁদের বক্তব্য, “বাংলাদেশি ঘোষণা ও বাংলাদেশি কাগজ নিয়ে নাগরিকত্ব নয়। ২০২৪ সাল পর্যন্ত যারা বাংলাদেশ থেকে ছিন্নমূল হয়ে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।”
মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাধিক পদাধিকারী অনশন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার CAA-এর নামে মতুয়াদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
ঠাকুরবাড়িতে দ্বন্দ্বের আগুন
এসআইআর বিতর্কে আরও একবার ফাটল দেখা দিয়েছে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। এদিন গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর নতুন করে তৃতীয় সমান্তরাল কমিটি গঠন করেন “অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ”-এর নামে। উপদেষ্টা মণ্ডলীতে রাখা হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক নেতাকে— বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অসীম সরকার, স্বপন মজুমদার, এবং অশোক কীর্তনিয়া।
উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত দুটি আলাদা মতুয়া কমিটি সক্রিয় ছিল।
একাংশ বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে সংগঠনের সঙ্ঘাধিপতি হিসেবে মানে।
অন্য অংশ তৃণমূলের মমতাবালা ঠাকুরের নেতৃত্বে চলে।
এবার সুব্রত ঠাকুরের নতুন কমিটি গঠনের ফলে, মতুয়া সমাজে তৃতীয় ভাগের উদ্ভব ঘটেছে বলে পর্যবেক্ষক মহলের মত। সুব্রতও তাঁর প্রয়াত পিতাকে প্রধান সেবায়ত পদে রেখেছেন।
মতুয়াদের মধ্যে বিভাজন
উল্লেখ্য, শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে বিজেপি শিবিরের তরফে CAA-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্যাম্প চালানো হচ্ছে। শান্তনুর দাবি, মতুয়ারা এভাবেই আইনি নাগরিকত্ব পাবেন।
কিন্তু মমতাবালা ঠাকুর শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছেন। তাঁর অভিযোগ, “মতুয়াদের ধোঁয়াশার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। নাগরিকত্বের আবেদন করলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”
ফিচারড ইমেজ: এই সময়


