কতজন হিন্দু শরণার্থী জেলে আটক রয়েছেন? রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইলো কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে হিন্দু শরণার্থীদের। তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ২ সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র—দু’পক্ষকেই বিস্তারিত লিখিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে কত জন বাংলাদেশি হিন্দু বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে বন্দি আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাঁরা কত দিন ধরে আটক রয়েছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আগত হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য যে আইন রয়েছে— নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন (CAA)— সেটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনা কী?
এই বিষয়ে মামলা দায়ের করেন গোপাল গোয়ালি নামে এক সিএএ আন্দোলনকারী। তাঁর আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতে অভিযোগ করেন, “বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিভিন্ন অজুহাতে ভারতের বিভিন্ন জেলে আটক রাখা হচ্ছে। অনেকের জামিনের আবেদনও নিম্ন আদালতে খারিজ হয়ে যাচ্ছে। অথচ এরা কেউ অপরাধী নন; বরং ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাই তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।”
মামলাকারীর পক্ষের যুক্তি, “নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে— ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-র আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান ও পার্সি ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।”
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যাতে সাফ বলা হয়েছে, ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভারতে আশ্রয় নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও উদ্বাস্তু হিন্দুদের আটকে রাখা হচ্ছে কেন? উঠছে প্রশ্ন।
আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইকোর্টের এই নির্দেশ হিন্দু শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। তাঁরা পুলিশি হয়রানির হাত থেকে বাঁচবেন।


