কেরালা স্টোরির তীব্র সমালোচক সিপিএম নেতার মেয়েই লাভ জিহাদের শিকার
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কেরালার কাসারগোড় জেলায় সিপিএম সদস্য পি. ভি. ভাস্করনের মেয়ে সঙ্গীতা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন যে, ভিন্ন ধর্মের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে চাওয়ায় তাকে বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি জানান, তার বাবা তাকে গৃহবন্দি করে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করছেন, চিকিৎসার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না।
সঙ্গীতার বক্তব্য অনুযায়ী, একটি দুর্ঘটনায় কোমর থেকে নিচের অংশ অবশ হয়ে যাওয়ায় তিনি শারীরিকভাবে চলাফেরায় অক্ষম। এর মধ্যেই তিনি নিজের ইচ্ছায় মুসলিম যুবক রশিদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। কিন্তু সেই ইচ্ছা জানাতেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়।
সঙ্গীতার অভিযোগ, “মাথায় বারবার আঘাত করা হয়েছে। এমনকি বলা হয়েছে, এই বাড়িতে কমিউনিজমের কোনও স্থান নেই।” আরও বলেন, “আমার বাবা হুমকি দিয়েছেন, আমি যদি কথা না শুনি তবে তিনি আমাকে মেরে ফেলবেন এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে আইনকে নিজের পক্ষে ঘুরিয়ে নেবেন।”
এই নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে সঙ্গীতা এক বন্ধুর সহায়তায় হেবিয়াস করপাস আবেদন করেছিলেন আদালতে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশের রিপোর্টে উল্লেখ ছিল যে তিনি নাকি স্বেচ্ছায় বাবা-মায়ের সঙ্গে রয়েছেন। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। সঙ্গীতার দাবি, পুলিশের অনেকেই তার বাবার রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তার কথা শুনতে অস্বীকার করেছেন।
শেষ পর্যন্ত তিনি জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা কালেক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন এবং তার পরই গোপনে তৈরি ভিডিও বার্তাটি প্রকাশ করেন। তবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত কাসারগোড় পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও আইনি পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, পি. ভি. ভাস্করন মেয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, রশিদ নামে যে যুবকের সঙ্গে সঙ্গীতা বিয়ে করতে চায়, সে নাকি ইতিমধ্যেই বিবাহিত এবং সঙ্গীতার প্রায় ১.৫ কোটি টাকার সম্পত্তির লোভেই ঘনিষ্ঠ হয়েছে। তার দাবি, “রশিদের ভালোবাসা নিছক ভণ্ডামি, সে শুধুই টাকার পিছনে।”
উল্লেখ্য, এই ভাস্করনই কিছুদিন আগে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটিকে ‘সংঘ পরিবার’-এর প্রোপাগান্ডা বলেছিলেন। সিনেমায় ‘লাভ জিহাদ’ এর ভয়াবহতা ফুটিয়ে তোলা হয়। কেরালায় শাসক এলডিএফ এবং বিরোধী ইউডিএফ উভয় শিবিরই বরাবর দাবি করে এসেছে যে, ‘লাভ জিহাদ’ আসলে একটি কাল্পনিক ধারণা, বাস্তব নয়।
তবে সঙ্গীতা-রশিদ সম্পর্কের ঘটনাটি সেই বিতর্ককেই নতুন করে উসকে দিয়েছে। The News Minutes


