Tuesday, November 11, 2025
Latestদেশ

স্কুলে পড়ানো হবে আয়ুর্বেদ, জানালো NCERT

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে জাতীয় শিক্ষানীতি। এই নীতির আওতায় এবার ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত করা হচ্ছে আয়ুর্বেদ বিষয়ক অধ্যায় (Ayurveda Chapters)। এনসিইআরটির (NCERT) এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ছাত্র–ছাত্রীদের প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিজ্ঞান, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হবে।

এনসিইআরটির নির্দেশক দীনেশ প্রসাদ সাকলানি জানিয়েছেন, “বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে আয়ুর্বেদ যুক্ত করা হবে।” অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের ‘কিউরিওসিটি’ শীর্ষক তৃতীয় অধ্যায়ে আয়ুর্বেদের পরিচয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেখানে দৈনন্দিন জীবনযাপন, ঋতুচক্র অনুযায়ী শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষার মতো বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞান–বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা বৃদ্ধি করা এবং স্বাস্থ্য ও নৈতিকতার বিষয়ে সচেতন করে তোলা। আয়ুর্বেদকে শুধুমাত্র চিকিৎসাবিদ্যা হিসেবে নয়, বরং এক সমন্বিত জীবনদর্শন হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

আয়ুষ মন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব জানিয়েছেন, “এনসিইআরটি ও ইউজিসি যৌথভাবে কাজ করছে যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা যায়। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্বাস্থ্য, নৈতিকতা এবং জীবনশৈলী সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

সূত্রের খবর, এনসিইআরটি শুধু মাধ্যমিক স্তরেই নয়, ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার পাঠক্রমেও আয়ুর্বেদ অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) আয়ুর্বেদ বিষয়ক কোর্স ও মডিউল তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

২০১৯ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির (NEP 2019) অন্যতম লক্ষ্য হল ভারতের প্রাচীন জ্ঞান–পরম্পরা ও সংস্কৃতিকে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা। আয়ুর্বেদ অধ্যায় সংযোজন সেই নীতিরই বাস্তব রূপ, যা একদিকে বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা বজায় রাখবে, অন্যদিকে ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আত্মিক যোগ তৈরি করবে।

বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে আয়ুর্বেদের অন্তর্ভুক্তি শুধু একটি নতুন অধ্যায় নয়, বরং এটি ভারতীয় শিক্ষার পুনর্জাগরণের প্রতীক। এই উদ্যোগে প্রাচীন জ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানকে একত্রে এনে আগামী প্রজন্মকে আরও স্বাস্থ্যবান ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা স্পষ্ট।