Monday, November 10, 2025
Latestদেশ

বনভূমি খালি করতে ৩০০-রও বেশি বাংলাদেশি মুসলিম পরিবারকে নোটিশ, রবিবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু অসম সরকারের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: অসমে ফের শুরু হলো অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেছেন, রবিবার (৯ নভেম্বর) থেকে গোয়ালপাড়া জেলার দোহিকোটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে শুরু হবে নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান। লক্ষ্য—বাংলাদেশি মুসলিম দখলদারদের থেকে বনভূমি দখলমুক্ত করা।

মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেছেন, “কিছু মানুষ গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর আবেগকে ব্যবহার করে অসমে অশান্তি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে চাপের মুখে ফেলে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করা। কিন্তু আমি সেই সুযোগ দেয়নি। উচ্ছেদ অভিযান ৯ নভেম্বর থেকেই শুরু হবে।”

উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার অসম জুড়ে অবৈধ দখলকৃত জমি উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, সমস্ত অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দখলে রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, রাজ্যে ২৯ লক্ষ বিঘা (৯.৫ লক্ষ একরেরও বেশি) জমি এখনও অবৈধভাবে দখলকৃত। যেখানে গত চার বছরে ১.২৯ লক্ষ বিঘা (৪২,৫০০ একরেরও বেশি) জমি থেকে অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদ করা হয়েছে।”

বনবিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযানে অংশ নেবে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে দোহিকোটা সংরক্ষিত বনের প্রায় ১,১৪৩ বিঘে বনভূমি থেকে দখলদার উচ্ছেদ করা হবে। ইতিমধ্যেই ওই এলাকার প্রায় ৩০০-রও বেশি বাংলাদেশি মুসলিম পরিবারকে বনভূমি খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর অনেক পরিবারই বনাঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র সরে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

দোহিকোটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলটি হাতির অন্যতম আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু অবৈধ দখলদারি ও মানব বসতির কারণে সেখানে হাতির স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে। ফলস্বরূপ, গত কয়েক বছরে গোয়ালপাড়া জেলায় মানুষ–হাতি সংঘাতের ঘটনাও ক্রমে বেড়েছে।

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এই উচ্ছেদ অভিযানের মূল লক্ষ্য শুধু অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ নয়, বরং বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করা। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগেই একাধিকবার বলেছেন, “অসমের এক ইঞ্চি বনভূমিও বেআইনি দখলে থাকতে দেওয়া হবে না।”

বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উচ্ছেদ অভিযানের পর দোহিকোটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পুনরায় বনায়ন ও হাতির আবাসস্থল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

তথ্যসূত্র: Northeast Today