নবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যা
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভয়াবহ অশান্ত বাংলাদেশ। এবার মাঝরাস্তায় হিন্দু যুবককে পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যা করা হলো। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকায়। বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি ডুবালিয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দীপুকে (Dipu Chandra Das) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে পিটিয়ে অর্ধমৃত করার পর ওই যুবকের দেহ গাছের সঙ্গে বেঁধে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভালুকা থানার পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম দীপু চন্দ্র দাস (৩০)। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন এবং ওই এলাকায় ভাড়া থাকবেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন কর্মকর্তারা।
ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিয়া বলেন, “নবীকে নিয়ে কটূক্তি করার কারণে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে একদল উত্তেজিত জনতা তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে। তারপর মরদেহে আগুন দিয়েছে।” এই ঘটনায় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। নিহত দীপু দাসের মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। রিপন মিয়া বলেন, “আমরা উনার আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ করছি। তারা এসে মামলা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ধর্মীয় অবমাননার গুজব ছড়িয়ে হামলার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও এমনটা ঘটেছে। বাংলাদেশে ইসলামপন্থা ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বেড়েই চলেছে। ময়মনসিংহের এই ঘটনাটি এর একটি উদাহরণ।
ইতিমধ্যে, কট্টর ভারতবিরোধী বাংলাদেশি ইসলামপন্থী নেতা ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর, বাংলাদেশ জুড়ে ব্যাপক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। ইনকিলাব প্ল্যাটফর্মের সমর্থক, ইসলামপন্থী এবং শেখ হাসিনার বিরোধীরা ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী এবং অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ করছে। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ ইসলামপন্থী জনতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগ সহ রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’-এর অফিসেও হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ‘দিল্লি না ঢাকা’ এবং ‘ভারতের আগ্রাসন ভেঙে ফেলো এবং চূর্ণ করো’ সহ বিভিন্ন ভারতবিরোধী স্লোগান দেন তারা।
ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের সাথে সাথেই ইসলামপন্থীরা চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের দিকে মিছিল করে। তারা বাসভবনেও আক্রমণের চেষ্টা করে। নিরাপত্তারক্ষীরা ইসলামপন্থীদের থামানোর চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীরা একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। এতে চট্টগ্রামের রাস্তায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়। এদিকে, কট্টরপন্থী বাংলাদেশী ইসলামপন্থী নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর, এনসিপি নেতা ও ইসলামপন্থী সরজিস আলম ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ‘বন্ধ’ করার ঘোষণা দেন। ভারতকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘ভারত হাদির খুনিদের হস্তান্তর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ থাকবে।’
তথ্যসূত্র: Sriti O Chetona


