Saturday, December 13, 2025
Latestদেশ

ওড়িশায় ৩৫ জন বাংলাদেশি হিন্দু ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ওড়িশায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এর অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন ৩৫ জন বাংলাদেশি হিন্দু। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে আশ্রয় নেওয়া ৩৫ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে ভারতীয় নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট তুলে দেন। এ নিয়ে ওড়িশায় মোট ৫১ জন নাগরিক CAA-র আওতায় নাগরিকত্ব পেলেন। রাজ্য প্রশাসনের দাবি, ১১০০টি আবেদন এখনও যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।

ডিরেক্টরেট অফ সেনসাস অপারেশনের রিপোর্ট অনুসারে, এদিন নাগরিকত্ব পাওয়া সকলেই বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের। তাঁদের অধিকাংশই অতীতে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরিতোষ সরকার নামে এক সুবিধাভোগীর বক্তব্য, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর প্রতিশোধমূলক হামলায় বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর গণহত্যা, জোরপূর্বক ধর্মান্তর এবং যৌন নির্যাতন শুরু হয়েছিল। সেই সময়ই তাঁর পরিবার কলকাতা হয়ে ওড়িশার নবরংপুর জেলার ওমরকোটে স্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়। বহু দশক পর এবার তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন।

এই তালিকায় রয়েছেন কিরণ মণ্ডলও। তিনি নাগরিকত্ব পেলেও তাঁর মা ও ভাই এখনও পাননি। কাগজপত্রে অসঙ্গতি থাকার কারণে তাঁদের আবেদন জেলা ও রাজ্যস্তরের কমিটির কাছে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।

ঐতিহাসিকভাবে ওড়িশার সঙ্গে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের একটি যোগ রয়েছে। ১৯৫০-এর দশকে পূর্ব পাকিস্তানে অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়ে হাজার হাজার হিন্দু বাঙালি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিপুল উদ্বাস্তু পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেয়। পুনর্বাসনের জন্য মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশার দণ্ডকারণ্য অঞ্চলেও তাঁরা আশ্রয় নেন। তখন ওড়িশার মলকানগিরি এবং নবরংপুর জেলায় তৈরি করা হয় ২০০টি পুনর্বাসন গ্রাম। পরবর্তী দশকগুলিতে বাংলাদেশে পরিস্থিতি খারাপ হলে বহু হিন্দু পরিবার আত্মীয়দের কাছে এই এলাকাতেই আশ্রয় নিতে থাকে।

২০২৪ সালের ১১ মার্চ কার্যকর হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নিপীড়নের কারণে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪–র আগে ভারতে প্রবেশ করা অমুসলিমরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেই বিধান মেনেই এবার ওড়িশায় নতুন করে নাগরিকত্ব পেল এই ৩৫ জন।