Sunday, October 12, 2025
Latestদেশ

চাপের মুখে নতিস্বীকার? তালিবান বিদেশমন্ত্রীর দ্বিতীয় সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলো মহিলা সাংবাদিকদের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: দিল্লিতে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির (Amir Khan Muttaqi) রবিবার ফের সাংবাদিক বৈঠক করলেন। এবারের বৈঠকে সকল সাংবাদিক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে শুক্রবারের প্রথম বৈঠকে কোনও নারী সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঘটনায় তুমুল বিতর্ক হয়। এরপরেই সিদ্ধান্ত বদল তালিবান বিদেশমন্ত্রীর। 

শুক্রবারের বৈঠকে কেবল পুরুষ সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। খবর ও ছবি প্রকাশের পর নারী সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন, নারীর অধিকার কর্মী এবং রাজনৈতিক বিরোধীরাও এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন।

এই বিতর্কের জবাবে মুত্তাকি রবিবার জানান, ‘‘প্রথম বৈঠকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া ইচ্ছাকৃত নয়, বরং প্রযুক্তিগত ত্রুটির ফল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বৈঠকটি খুব অল্প সময়ে আয়োজন করতে হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল এবং তাতে কেবল কয়েকজন সাংবাদিকের নামই ছিল। এর পিছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’’

ভারতের Editors Guild of India এবং Indian Women’s Press Corps একযোগে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তারা বলেন, ‘‘এটি সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক আচরণ। কূটনৈতিক প্রটোকল বা ভিয়েনা কনভেনশনকে এর সমর্থন হিসাবে দেখানো যায় না।’’

মুত্তাকি আজব সাফাই দিলেও আফগান নারীদের বিরুদ্ধে তালিবান সরকারের পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদী ও পদ্ধতিগত নিপীড়ন। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার ও চাকরির সুযোগ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘‘নারীদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে এবং তা পদ্ধতিগত ও সুসংগঠিত।’’

এ প্রসঙ্গে ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘তালিবান বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকের আয়োজনের সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই।’’

যদিও বিরোধীরা কেন্দ্রের ভূমিকে নিয়ে সরব হন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেন, “মোদীজি, আপনি যখন নারী সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে এমন বৈঠক হতে দেন, তখন প্রতিটি ভারতীয় মহিলাকে বার্তা দেন যে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর শক্তি আপনার নেই।” প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যদি নারী অধিকার নিয়ে আপনার অবস্থান সত্যিই নীতিগত হয়, তবে এমন অপমান কীভাবে মেনে নেওয়া হল?’’ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, “এটা লজ্জাজনক। ভারতের মাটিতে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া মানে প্রতিটি ভারতীয় মহিলাকে অসম্মান করা।”

রবিবারের বৈঠকে সব নারী-পুরুষ সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানোয় কিছুটা হলেও বিতর্কের মাত্রা কমেছে। তবে নারীর অধিকার নিয়ে তালিবান সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।