আফগানিস্তানের পাল্টা প্রত্যাঘাতে নিহত ১৫ পাক সেনা, উত্তেজনা চরমে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা চরমে। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবান সরকারের দাবি, হেলমন্দ প্রদেশে তাদের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন পাকিস্তানি সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। পাল্টা পাকিস্তান দাবি করছে, সীমান্তে ১৯টি আফগান ঘাঁটি দখল করেছে তাদের সেনা এবং বহু তালিবান সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। দুই দেশের এই সশস্ত্র সংঘর্ষে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে।
হেলমন্দের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মলাওয়ি মহম্মদ কাসিম রিয়াজ জানান, শনিবার রাতে পাকিস্তানের সীমান্ত অঞ্চলে আফগান বাহিনী অভিযান চালায়। সেই অভিযানে ১৫ জন পাক সেনা নিহত হন। তিনি আরও দাবি করেন, ডুরান্ড লাইনের কাছে তিনটি পাকিস্তানি ঘাঁটি আফগান তালিবান বাহিনী দখল করেছে এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ এবং রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তে ১৯টি ঘাঁটি দখল করেছে পাকিস্তানি সেনা। ওই ঘাঁটিগুলিতেই তালিবান বাহিনী পাক সেনাদের উপর হামলা চালিয়েছিল বলে দাবি ইসলামাবাদের। পাকিস্তানের সেনা সূত্রের দাবি, আফগান তালিবানের মানোজবা ক্যাম্প ব্যাটেলিয়ন সদর দফতর, জনদুসর ঘাঁটি, তুর্কমেনজ়াই ঘাঁটি এবং খরচার দুর্গ ধ্বংস করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, “আফগানিস্তান থেকে হামলার পর সেনা অবিলম্বে জবাব দেয় এবং সীমান্তে সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”
উত্তেজনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ তোলে তালিবান সরকার। কাবুলের দক্ষিণ-পূর্বে টানা দুটি বিস্ফোরণ ঘটে, যার দায় পাকিস্তানের উপর চাপায় কাবুল। তালিবান সরকারের অভিযোগ, এই হামলার মাধ্যমে আফগান সার্বভৌমত্বে আঘাত হেনেছে পাকিস্তান। সেই অভিযোগের প্রতিশোধ হিসেবেই শনিবারের পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি তালিবানের।
দুই দেশের মধ্যে এই সামরিক সংঘর্ষ ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে একাধিক দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তবিরোধ মেটানোর বার্তা দিয়েছে। তবে বাস্তবে সীমান্তজুড়ে গুলির লড়াই এখনও থামেনি।