Saturday, October 4, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

সরকার বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) পরিস্থিতি ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার ভেঙে পড়া চিত্র, বিদ্যুতের অন্যায্য ট্যারিফের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি পিওকের সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন। আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি নামে স্থানীয় সংগঠন সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট, শাটার ডাউন এবং চাক্কা জ্যামের ডাক দিয়েছে।

৩৮ দফা দাবি, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ চরমে

বিক্ষোভকারীদের মোট ৩৮টি দাবি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম—

পাকিস্তানে বসবাসকারী কাশ্মীরী শরণার্থীদের জন্য কাশ্মীর বিধানসভায় সংরক্ষিত ১২টি আসনের অবলুপ্তি।

ময়দার দাম কমানো।

বিদ্যুতের উপর ন্যায্য ট্যারিফ আরোপ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সরকারকে সমস্যার কথা জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইসলামাবাদ। ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। সব জায়গায় দুর্নীতি জেঁকে বসেছে। বাধ্য হয়েই সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের নেতা শওকত নওয়াজ মীর। তাঁর কথায়, “আমাদের আন্দোলন প্রতিষ্ঠানবিরোধী নয়, এটি সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই।”

ইসলামাবাদের কঠোর পদক্ষেপ

অভ্যুত্থান আশঙ্কায় পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মধ্যরাত থেকেই পিওকের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সেনার গাড়ি টহল দিচ্ছে শহরাঞ্চলে। পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে এবং নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।

রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি

কয়েকদিন আগেই মরক্কোয় গিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, “পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য আক্রমণের প্রয়োজন নেই। সেখানকার মানুষই ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবি তুলবেন।” বর্তমান আন্দোলন যে সেই বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, তা বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টই মনে করছেন।

পাকিস্তানের নিপীড়ন থেকে মুক্তির দাবি

গত বছর থেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ পাকিস্তানের নিপীড়ন থেকে মুক্তির দাবি তুলছিলেন। এবারের গণআন্দোলন সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। স্থানীয়দের ক্ষোভ, দুর্নীতি ও শোষণের বিরুদ্ধে এই লড়াই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনেকের মতে, পিওকের এই অস্থিরতা ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক সমীকরণেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।