Sunday, October 5, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

এবার ওষুধে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের, ক্ষতির মুখে ভারতীয় ফার্মা সেক্টর

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের আমদানির উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে এই সিদ্ধান্ত। এরফলে ক্ষতির মুখে পড়বে ভারতীয় ওষুধ রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলো। পাশাপাশি, আমেরিকায় ওষুধের দাম বাড়বে। 

বৃহস্পতিবার শুল্ক বৃদ্ধির নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করে ট্রাম্প স্পষ্ট জানান, আমেরিকায় যদি কোনও সংস্থা নিজস্ব ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করে, তবে এই শুল্ক তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

ভারতীয় ওষুধ রফতানিকারকদের চিন্তা

আমেরিকা ভারতীয় ওষুধ শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় বাজার। বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যের জেনেরিক ওষুধের ক্ষেত্রে মার্কিন বাজারের উপর দীর্ঘদিন ধরেই নির্ভর করে এসেছে ভারতীয় সংস্থাগুলি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ৩.৬ বিলিয়ন ডলার (₹৩১,৬২৬ কোটি) এবং ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে আরও ৩.৭ বিলিয়ন ডলার (₹৩২,৫০৫ কোটি) মূল্যের ওষুধ আমেরিকায় রফতানি করেছে। ডঃ রেড্ডিস, সান ফার্মা, লুপিন, অরবিন্দ—এই সংস্থাগুলিই মূলত মার্কিন বাজারে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছে।

তবে ট্রাম্পের ঘোষণায় মূলত ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্ট ওষুধকেই নিশানা করা হলেও, ভারত থেকে রফতানি হওয়া কমপ্লেক্স জেনেরিক ও স্পেশালিটি ওষুধগুলির ওপরও শুল্কের প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা এর আগেই ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্কের মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ান তেল ক্রয় অব্যাহত রাখার কারণে ২৫ শতাংশ জরিমানা শুল্ক। ফলে নতুন করে ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপলে ভারতীয় ওষুধ শিল্প আরও বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

ওষুধ ছাড়াও একাধিক পণ্যে শুল্ক

ট্রাম্প শুধু ওষুধ নয়, আরও বেশ কিছু নির্দিষ্ট আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে—

রান্নাঘরের ক্যাবিনেটে ৫০% শুল্ক

গৃহসজ্জার আসবাবপত্রে ৩০% শুল্ক

ভারী ট্রাক আমদানিতে ২৫% শুল্ক

সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “পিটারবিল্ট, কেনওয়ার্থ, ফ্রেইটলাইনার, ম্যাক ট্রাক এবং অন্যান্য মার্কিন ট্রাক উৎপাদনকারীদের সমর্থনের জন্য বিশ্বের অন্যত্র তৈরি সমস্ত ভারী ট্রাকের উপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, ট্রাক আমদানির উপর শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা। চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন ট্রাক আমদানির ক্ষেত্রে ‘জাতীয় নিরাপত্তার প্রভাব’ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল।

সম্ভাব্য প্রভাব

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন করে চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষত ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপন ছাড়া ভারতীয় সংস্থাগুলির সামনে বিকল্প খুবই সীমিত। ফলে আগামী দিনে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন উত্তেজনার মুখে পড়তে পারে।