Monday, October 6, 2025
Latestরাজ্য​

দত্তপুকুরে RSS-এর শতবর্ষ উদযাপন 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: গত রবিবার, মহালয়ার দিন দত্তপুকুরে জয়পুল বিশ্বকবি ক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আরএসএস, দত্তপুকুর খন্ডের একত্রীকরণ অনুষ্ঠান। ১৯২৫ সালে বিজয়া দশমীর দিন নাগপুরে স্থাপিত হয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, সংক্ষেপে আরএসএস! প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতায় অনুশীলন সমিতির থেকে ট্রেনিং নিয়ে যাওয়া ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার। এই ২০২৫ এ তাই সংঘের শতবর্ষে পা পড়ছে। সেই উপলক্ষ্যে আগামী এক বছর ব্যাপী অসংখ্য কর্মসূচি নিয়েছে সংঘ। এই একত্রীকরণ ছিল সেই কর্মসূচিররই প্রথম অনুষ্ঠান। 

যদিও বাকি ভারতে একত্রীকরণ (ক্ষেত্র বিশেষে রুট মার্চ) সংঘ প্রতিষ্ঠার দিন অর্থাৎ বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হবে। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের ভাষণও যথারীতি বিজয়া দশমীতেই দেওয়া হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে একত্রীকরণ ও রুটমার্চ হয়ে গেলো মহালয়ার দিনই। প্রতি বছরই বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে এখানে মহালয়ার দিনেই হয়। কারণ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোতে সবাই ব্যস্ত থাকায় সঠিকভাবে একত্রীকরণ পালন করা সম্ভব হবেনা দশমীতে। বদলে দশমীর দিন পশ্চিমবঙ্গে হয় অস্ত্রপুজো। 

পুরো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এক হাজারেরও বেশি মহালয়ার অনুষ্ঠান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল বারাসাত সাংগঠনিক জেলার দত্তপুকুর খণ্ডে পূর্ণ গণবেশে (সংঘের সম্পূর্ণ uniform পড়ে) স্বয়ংসেবকদের একত্রীকরণ। খণ্ডের কার্যবাহ (Block Executive Head) তরুণ কুমার বালা এবং খণ্ডের সহকার্যবাহ (Assistant Block Executive Head) রাখাল ঘোষ এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই একত্রীকরণ। প্রধান অতিথি ছিলেন রামপ্রসাদ মঠ ও মিলন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজ আগমানন্দ স্বামী। মুখ্য বক্তা ছিলেন শ্রী আনন্দ মণ্ডল। 

এই দিন দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে এই একত্রীকরণ শুরু হয়। পূর্ণ গণবেশে উপস্থিত ছিল প্রায় একশ মত স্বয়ংসেবক। এছাড়াও নাগরিক ও গণবেশহীন স্বয়ংসেবকদের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। নারীদের উপস্থিতিও ছিল যথেষ্ট। স্বয়ংসেবকরা এখানে বিভিন্ন যোগব্যায়াম প্রদর্শন করেন। দেশভক্তিমূলক গান গাওয়া ও অনুপ্রেরণামূলক সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তি করা হয়। পাঠ করা হয় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ এর লেখাও। এছাড়াও বিশেষ আকর্ষন হিসাবে ছিল বিশেষ বাছাই করা স্বয়ংসেবকদের দ্বারা আয়োজিত নিযুদ্ধ ( Martial art) ও দণ্ড প্রদর্শন (লাঠি খেলা)। 

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত স্বয়ংসেবক ও নাগরিকদের মিষ্টিমুখ করানো হয়। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যজুড়ে এক লক্ষেরও বেশি স্বয়ংসেবক এই দিন মহালয়ার একত্রীকরণে অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠিত হয়েছে এক হাজারেরও বেশি অনুষ্ঠান। তার মধ্যে কেবল দক্ষিণ বঙ্গেই হয়েছে তিনশরও বেশি। আর শুধু বারাসাত সাংগঠনিক জেলাতে হয়েছে মোট ২০ টি অনুষ্ঠান। আনন্দ মঠের স্রষ্টা বঙ্কিম বা গীতা হাতে মা কালীর সামনে শপথ নেওয়া অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের হাতে একদিন যে হিন্দুত্ব লালিত হয়েছিল এই বাংলায়, সেই হিন্দুত্বের পুনর্জাগরণ এরই ইঙ্গিত দেখালো মহালয়ার দিনে সংঘের এই প্রদর্শন।