২৮ বছর হয়ে গেলেও ন্যায়বিচার পেলেন না ফেলানী বসাক
নদীয়া: ১৯৯৩ সাল। আজ থেকে প্রায় ২৮ বছর আগের ঘটনা। নদিয়ার শান্তিপুরের বেলঘড়িয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের কালিপুর এলাকার বাসিন্দা ৭৭ বছর বয়সী ফেলানী বসাক আজও তাঁর মেয়ের ধর্ষকদের শাস্তি দাবি জানান। মমতা ফেলানী বসাকের নির্যাতিত মূক বধির মেয়ে দীপালীকে মুখ করে বাংলার মাটিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেদিনের দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিলো, দীপালীর উপর পাশবিক অত্যাচারের সুবিচার।
ফুলিয়া পাড়ার স্থানীয় বাম নেতৃত্বের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিলেন মূক বধির দিপালী বসাক। মা ফেলানিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলার মাটিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন মমতা। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে তৎকালীন বাম সরকারের সদর দফতর রাইটার্স বিল্ডিংয়ে হাজির হয়েছিলেন মমতা। এহেন বিক্ষোভের কেঁপে উঠেছিল গোটা রাজ্য। আন্দোলনকে প্রতিহত করতে কলকাতার রাজপথে গুলি চলেছিল সেদিন। নিহত হয়েছিল তরতাজা ১৩ জন কংগ্রেস কর্মী।
এরপর কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। তাঁকে অনুসরণ করে কংগ্রেস ছেড়ে অনেকেই বেরিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এরপর থেকে প্রতিবছর ২১ জুলাই দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে তৃণমূল।
প্রত্যেক বছর নিয়ম করে ২১ জুলাই শহিদ দিবসের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে যায় ফেলানী বসাকের বাড়িতে। কিন্তু, তাঁর দাবি আজও পুরণ হয়নি। মেলেনি ন্যায়বিচার। ফেলানী বসাকের মেয়ের ধর্ষণকারীরা আজও শাস্তি পাইনি। তাই, অভিমানে এবারের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেলেন তিনি।
নিয়ম করে প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের নিমন্ত্রণ পত্র ফেলানী বসাকের বাড়ি পৌঁছালেও অনেকবার চেষ্টা করেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি বলা সুযোগ পাননি তিনি। অথচ, একদিন যাদের কথায় ছুটে গিয়েছিলেন কলকাতায়, রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিলেন, তাদের কেউই কোনও খোঁজ রাখেন না ফেলানী বসাকের। সামান্য ত্রাণটুকুও পান না তিনি। করোনার জেরে ছেলে চাকরি হারিয়ে ঘরে বসে আছেন। ছেলের স্ত্রীও পরিচারিকার কাজ করতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেটাও বন্ধ। ফলে কার্যত অনাহারেই দিন কাটছে ফেলানী বসাকের পরিবারের।


