গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুর হার সবথেকে বেশি, ১২.৮%
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিরোধীরা বার বার প্রশ্ন তুলেছে৷ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলা হয়৷ মৃতের সংখ্যার পর এবার কেন্দ্রের চাপের মুখে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা জানিয়ে দিতে বাধ্য হল মমতার সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, এখনও পর্যন্ত বাংলায় করোনায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৫৯ জন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাঠানো আন্তঃমন্ত্রক টিম দু’সপ্তাহ রাজ্যে থাকার পর আজ সোমবার দিল্লি ফিরে যাচ্ছে। ফিরে যাওয়ার আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে তীব্র অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন আন্তঃমন্ত্রক টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। তিনি বলেছেন, প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় দলের প্রতি শত্রুমনোভাবাপন্ন আচরণ করেছে রাজ্য।
অপূর্ব চন্দ্র চিঠিতে লিখেছেন, ৩০ এপ্রিল রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যু এবার থেকে দৈনন্দিন পরিসংখ্যানে স্থান পাবে। স্বচ্ছতা বজায় রাখার উদ্দেশে এটা বড় পদক্ষেপ ঠিকই৷ কিন্তু এর থেকে আর একটা বড় ছবি পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে ৮১৬টি কোভিড পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছিল। তার মধ্যে মারা গিয়েছিলেন ১০৫ জন। যার অর্থ পশ্চিমবঙ্গে কোভিডে মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ। যা গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই মৃত্যুর হারই ইঙ্গিত করছে যে বাংলায় টেস্টিং কম হচ্ছে এবং নজরদারিও অতিশয় দুর্বল৷
পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রের ওই প্রতিনিধি দল। দুটি মধ্যে একটি টিম কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ঘুরে দেখে। অপর টিমটি উত্তরবঙ্গ ঘুরে দেখে৷ সমালোচনার পাশাপাশি, রাজ্যের কয়েকটি উদ্যোগের প্রসংশাও করেছেন অপূর্ব চন্দ্র তাঁর চিঠিতে। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্য খুব দ্রুত নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়েছে। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত যেখানে রাজ্যে গড়ে ৪০০টি পরীক্ষা হত, সেখানে ২ মে পরীক্ষার সংখ্যা ২৪১০টি।
উল্লেখ্য, মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৫৯ জন। আর করোনা আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন ৯০৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২১৮ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২০১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে ৬১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫১১৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। রাজ্যে করোনামুক্ত হওয়ার হার ১৭.৩২ শতাংশে।
