রাজ্যপালের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, তরজায় তৃণমূল-বিজেপি
কলকাতা: রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সাথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের দ্বন্ধ এবার চরমে এল। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে ঝামেলার পর রাজ্য প্রশাসনের ওপর আস্থা নেই রাজ্যপালের। যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কান্ড, কার্নিভালের দিন তাঁর বসার জায়গা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে তাঁর সংঘাত তুঙ্গে। এরই মধ্যে এবার থেকে রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে না রাজ্য পুলিশ। রাজ্যপালকে জেড প্লাস ভিআইপি নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দায়িত্বে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য বিজেপি, তাঁদের দাবি, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবলু সুপ্রিয় যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন, ওই ঘটনাতেই প্রমাণ হয়, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। এখন থেকে রাজ্যপালের দায়িত্বে চার থেকে পাঁচজন আধাসেনা থাকবে।
জানা গেছে, এই উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব। বর্তমানে রাজ্যপাল জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রাজ্যপালের জন্য জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দাবি জানায় বাংলার বিজেপি নেতারা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এবার থেকে রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রসঙ্গত বলে রাখি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ একাধিক ভিআইপিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে সিআরপিএফ।
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, রাজ্যপালকে নিরাপত্তা দেয় রাজ্য সরকার। আগেও রাজ্যে রাজ্যপালরা ছিলেন, তাঁদেরই কেউ নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ করেননি বা তাঁদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। ওই শীর্ষ নেতার অভিযোগ, নিজেদের স্বার্থের জন্য বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ‘নাম খারাপ’ করছে।
এদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, যেভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল এবং বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থা করা হয়েছিল, তাতেই প্রমাণ হয়, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। দিলীপ ঘোষ বলেন, গোটা দেশ জানে, পশ্চিমবঙ্গে হিংসা এবং খুন হচ্ছে। আমরা দেখেছি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে হেনস্থা করা হয়েছিল, তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল রাজ্য পুলিশ। যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত, তার দায়িত্ব কে নিত ? দিলীপবাবু বলেন, সম্ভাব্য হুমকি আঁচ পেয়েই রাজ্যপালকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জেড প্লাস নিরাপত্তায় রাজ্যপালের সঙ্গে থাকবেন ৮ থেকে ১০জন স্বশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী।