Wednesday, April 23, 2025
Latestদেশ

শুল্ক যুদ্ধের মধ্যেই স্ত্রী উষাকে নিয়ে ভারত সফরে আসছেন ভাইস মার্কিন প্রেসিডেন্ট

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: চিনের সঙ্গে ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছে আমেরিকার। শুল্কযুদ্ধে ভারতের প্রতি কিছুটা সদয় মনোভাব দেখিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্কের বোঝা কিছুটা হ্রাস পেলেও সমালোচনার আঁচ থেকে রেহাই পাননি তিনি, এমনকি ভারতের বিভিন্ন মহলেও সেই সমালোচনার রেশ পৌঁছেছে। ঘরে বাইরে চাপের মুখে চিন ছাড়া বাকি দেশগুলোর উপর ৯০ দিনের নতুন শুল্ক স্থগিত রেখেছেন ট্রাম্প। এই আবহেই চলতি মাসের ২১ থেকে ২৪ এপ্রিল ভারত সফরে আসছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, সঙ্গে থাকবেন তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী উষা ভান্স।

এই সফরের গুরুত্ব বহুমাত্রিক। প্রথমত, একই সময়ে ভারত সফরে থাকবেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। ফলে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক দুই দিক থেকেই এই সফর ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে স্থির হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে। ভান্সের সফরে সেই দিকেই আরও এক ধাপ এগোনোর ইঙ্গিত মিলছে কূটনৈতিক সূত্রে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্সের সফরে তাঁর স্ত্রী উষার ভূমিকাও আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা ভান্সের এই সফর যেন তাঁর পিতৃভূমির প্রতিই এক আবেগঘন প্রত্যাবর্তন। সূত্রের খবর, দিল্লিতে সরকারি বৈঠকের ফাঁকে আগ্রা ও জয়পুরে ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। তাজমহল দেখার আগ্রহ যেমন প্রবল, তেমনই ‘পিঙ্ক সিটি’ জয়পুরের ঐতিহ্য নিয়েও তিনি যথেষ্ট কৌতূহলী।

যদিও এখনও পর্যন্ত হোয়াইট হাউস কিংবা ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি, তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক কার্যত নিশ্চিত। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থাকবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাবনা।

একজন উচ্চপদস্থ বিদেশ মন্ত্রক কর্তার কথায়, “ভান্সের সফর যদি পরিকল্পনামাফিক এগোয়, তাহলে আগামী তিন মাসের মধ্যেই বাণিজ্যিক সম্পর্কের একাধিক নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে।” অর্থাৎ চিনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে আমেরিকা যদি বিকল্প বাণিজ্যসঙ্গী হিসেবে ভারতের উপর অধিক গুরুত্ব দেয়, তবে তা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

এই সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব যেমন প্রবল, তেমনই ব্যক্তিগত আবেগ-সম্পর্কও জোরদার হতে পারে। তাই, জেডি ভান্স এবং উষা ভান্সের ভারত সফর নিঃসন্দেহে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।