Saturday, February 8, 2025
আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করলে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে আমেরিকা 

লকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলনকারী বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) তিনি এই সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। এই আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা যদি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেন, তবে তাদের ভিসা বাতিল করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।  

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পেছনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং মার্কিন ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপট কাজ করেছে। নতুন এই আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল সরকার ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হুমকি, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা পাবে। ইতিমধ্যে, ট্রাম্প বিচার বিভাগকে এ সংক্রান্ত তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।  

ট্রাম্প এক ফ্যাক্ট শিটে বিদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা যারা জিহাদপন্থী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন, আমরা আপনাদের নজরদারিতে রেখেছি। আমরা আপনাদের খুঁজে বের করব এবং নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে হামাসের প্রতি সহানুভূতি দেখানো সকল বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাতিল করা হবে।”  

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে ব্যাপক হামলা চালায়। এই হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে নেওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যা চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এই যুদ্ধে গাজায় প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়।  

এই যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। শত শত শিক্ষার্থী গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন এবং ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।  

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকারীরা। তারা মনে করেন, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনকারীদের মুখ বন্ধ করার একটি কৌশল মাত্র। তাদের মতে, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন। আগামী দিনে এই আদেশের প্রভাব কী হবে, তা নিয়ে এখনই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।