সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারালেন তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: চোপড়া (উত্তর দিনাজপুর): সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্যানেল সম্পূর্ণভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যজুড়ে প্রায় ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন চোপড়ার বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা, এমনকি তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের কন্যাও।
চাকরি হারানো শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন চোপড়া ব্লকের কালীগঞ্জ হাইস্কুলে নিযুক্ত বিধায়কের মেয়ে। যদিও বিধায়ক হামিদুল রহমান স্পষ্টভাবে জানান, “মেয়ে পরীক্ষার মাধ্যমেই চাকরি পেয়েছিল। এখন গোটা প্যানেলকে ভুয়ো বলা হচ্ছে, সেটা একান্তই আইনি বিষয়।”
চোপড়ার একাধিক স্কুলে বড় ধাক্কা
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চোপড়া গার্লস হাইস্কুল থেকে ৯ জন শিক্ষিকা, চোপড়া হাইস্কুল থেকে ৮ জন শিক্ষক, লক্ষ্মীপুর হাইস্কুলে মোট ৬ জন, যার মধ্যে টিআইসিও (Teacher-in-Charge) রয়েছেন—এভাবেই চোপড়া মহকুমায় ৪০ জনেরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী একঝটকায় চাকরি হারিয়েছেন।
কালীগঞ্জ হাইস্কুলের টিআইসি আফজল হুসেন বলেন, “যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁরা সকলেই দক্ষ। নিয়মিত স্কুলে আসেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়ান, এবং সরকারি বিভিন্ন দায়িত্বও পালন করেন।”
স্থানীয় স্তরে উদ্বেগ, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের হতাশা
এই রায়ের ফলে শুধু শিক্ষকদের নয়, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যেও চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। হঠাৎ করে এতজন শিক্ষক চলে যাওয়ার ফলে পাঠদান ও প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আইনি প্রেক্ষাপট ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণেই পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। তবে যাঁরা স্বচ্ছ উপায়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই রায় অন্যায় ও হৃদয়বিদারক বলে মনে করছেন অনেকে।
এই প্রসঙ্গে শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠছে—যাঁরা প্রকৃত মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে?