Sunday, June 22, 2025
Latestদেশ

ধর্ষকদের জনসমক্ষে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হোক, দাবি নির্যাতিতার মায়ের

হায়দরাবাদ: তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। ধৃত চার অভিযুক্তকে জেরা করে জানা গেছে, পরিকল্পনামাফিক টার্গেট করেই খুন করা হয়েছিল ওই তরুণী চিকিৎসককে। হায়দরাবাদের নির্যাতিতা পশু চিকিৎসকের মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে যেভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারা হোক চার অভিযুক্তকে।

পাশাপাশি, নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, পুলিশ যদি অভিযোগ নেওয়ার সময় তাঁদের এক থানা থেকে আর এক থানায় না ঘোরাতো, তাহলে হয়ত অকালে তাঁদের মেয়েকে হারাতে হত না।

ধৃত চার অভিযুক্তকে জেরার পর পুলিশ জানিয়েছে, গত বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ সামশাবাদের টোল প্লাজায় ইট ভর্তি লরি নিয়ে আসে মহম্মদ আরিফ এবং জল্লু শিবা। সেখানেই ছিল জল্লু নবীন এবং চিন্তাকুন্টা চেন্নাকেসাভুলু। চারজন মিলে লরি থেকে ইট নামাচ্ছিল। বছর কুড়ির ওই চার যুবক সন্ধ্যা ৬টা ১৫ নাগাদ তরুণী চিকিৎসকে টোল প্লাজায় স্কুটি পার্কিং করতে দেখেন। তারা তখনই ওই তরুণীকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে।

রাত ৯টার পর নিজের কাজ সেরে টোল প্লাজায় ওখানে ফিরে দেখেন স্কুটির চাকা পাংচার হয়ে গিয়েছে। কিভাবে বাড়ি ফিরবেন,  বুঝতে পারছিলেন না তিনি। সেই সময় আরিফ এবং শিবা তাঁর কাছে আসে। স্কুটির চাকা সারাই করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। দু’জনে গ্যারেজ খোঁজার অছিলায় স্কুটি নিয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর তারা স্কুটি নিয়ে ফিরে আসে। দোকান বন্ধ বলেই জানায় ওই তরুণী চিকিৎসককে।

নির্যাতিতার মা জানান, বুধবার রাত ৯ টা ২২ মিনিটে প্রথমবার নিজের বোনকে ফোন করেন নির্যাতিতা। জানিয়েছিলেন, তাঁর স্কুটিটি কয়েকজন ট্রাক চালক সারাতে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর খুব ভয় করছে। দিদির বিপদ হতে পারে তা আঁচ করেই রাত দশটা নাগাদ ওই টোল প্লাজায় পৌঁছন নির্যাতিতার বোন। তবে সেখানে দিদিকে দেখতে না পেয়ে নির্যাতিতাকে ফোন করেন তিনি। কিন্তু ফোন সুইচড অফ ছিল। সঙ্গে সঙ্গে গোটা ঘটনার কথা ফোনে বাবা- মাকে জানান নির্যাতিতার বোন। এরপর তাঁরা দ্রুত পুলিশে অভিযোগ জানান।

পুলিশের দাবি, ততক্ষণে টোল প্লাজা থেকে কিছু দূরে চার যুবক তরুণীকে টেনে নিয়ে যায়। নারকীয় অত্যাচার চালায়। ধর্ষণ করে রাত ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ খুন করে তরুণী চিকিৎসককে। একটি লরির মধ্যে তরুণী চিকিৎসকের দেহ তুলে নিয়ে যায়। রাত ১টা নাগাদ পেট্রোলের খোঁজ শুরু করে। দুই জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর পেট্রোল পায় তারা। ২ টা ৩০ মিনিট নাগাদ চত্তনপল্লির কাছে তরুণী চিকিৎসকের দেহ আগুন লাগিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।

বৃহস্পতিবার সকালে দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায় তাঁর দেহের। গলায় গণেশের লকেটের সাহায্যে ওই তরুণী চিকিৎসকের দেহ শনাক্ত করে পরিজনরা। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন এবং চিন্তাকুন্টা চেন্নাকেসাভুলুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিহতের মা বলেন, আমার মেয়ে একেবারেই নিষ্পাপ ছিল। আমি চাই দোষীদেরকেও জনসমক্ষে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হোক। এদিকে, সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনা দাবি করেছেন, নির্যাতিতার বোন আরজিআইএ পুলিশ স্টেশনে পৌঁছনোর পরেই পুলিশ দ্রুত তৎপর হয়। পাশাপাশি, তিনি আশ্বস্ত করেছেন, কোনও পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।