Saturday, May 24, 2025
আন্তর্জাতিক

ক্ষুধার্থ সন্তানদের মন ভোলাতে পাতিলে পাথর ‘রাঁধছেন’ মা, উনুনের পাশে অপেক্ষায় ৮ সন্তান

‎নাইরোবি: বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনা জেরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে লকডাউন। যার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে উপার্জন। তবে ক্ষুধার্থ সন্তানের মন তো আর তা বোঝে না; তাই বাধ্য হয়েই খাবার রান্নার ছলে পাথর জ্বালাচ্ছিলেন এক মা। ভেবেছিলেন- রান্না হচ্ছে দেখতে দেখতেই হয়তো ঘুমিয়ে পড়বে সন্তানেরা! ঘটনাটি ঘটেছে কেনিয়ার মোম্বাসা এলাকায়।

ওই মহিলার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে সম্প্রতি টেলিভিশনের মাধ্যমে এই মর্মস্পর্শী খবর প্রচার হওয়ার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে হতভাগ্য ওই নারীকে সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওই নারীর নাম পেনিনাহ বাহতী কিতসাও। আট সন্তানের জননী ওই মহিলা স্থানীয় একটি লন্ড্রিতে কাজ করতেন। তবে করোনার জেরে তাঁর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তার প্রতিবেশী পাথর ‘রান্নার’ খবর জানতে পেরে কেনিয়ার এনটিভিকে বিষয়টি জানান। এরপরই এতে তার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়।


টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার প্রচারের পর তাঁর সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন অনেকে। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে এবং ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয় তাঁর। ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাঁকে আর্থিক সহায়তা করছেন অনেকেই। জল-বিদ্যুতের সুবিধাবিহীন দু’কক্ষের একটি বাড়িতে থাকেন তাঁরা। সহায়তা পাওয়ার ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলে মনে করছেন তিনি।

কিতসাও বলেন, কেনিয়ার মানুষ এত ভালোবাসা জানাবে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। সারাদেশ থেকে ফোন এসেছে; সবাই জানতে চেয়েছন কিভাবে তারা সহায়তা করতে পারি। তিনি জানান, দীর্ঘসময় ধরে যখন রান্নার অভিনয় করছিলাম তখন আমার সন্তানের বলছিল- তুমি মিথ্যা বলছো। আমি বলতে পারিনি; আমার কিছুই করার ছিল না।

শিশুদের কান্নার শব্দে এক পর্যায়ে তার প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানিই তাঁদের বাড়িতে আসেন। ঘটনাটি দেখে তিনি এনটিভিকে খবর দেন। প্রসঙ্গত, করোনার পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে সহায়তা দিয়েছে কেনিয়ার সরকার; তবে কিতসাও পর্যন্ত সাহায্য পৌঁছাইনি। গত বছর সন্ত্রাসীদের হাতে তাঁর স্বামী নিহত হন। এরপর থেকেই ৮ সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।