ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় না দিয়ে করোনায় মৃত মুসলিমদের দেহ পুড়িয়ে দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা
কলম্বো: গত অক্টোবর থেকে শ্রীলঙ্কায় লাফিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। করোনা মোকাবিলায় এবার কড়া পদক্ষেপ নিল দেশটি। ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় না দিয়ে করোনায় মৃত মুসলিমদের দেহ পুড়িয়ে দিচ্ছে কলম্বো। ইতিমধ্যেই সেখানে ২৯ হাজার ৩০০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে মারা গিয়েছেন ১৪২ জন।
করোনায় মৃত ১৪২ জনের মধ্যে ১৯ মুসলিমের দেহ নিতে আবেদন করেনি তাদের পরিবার। দেশটির রাজধানী কলম্বোর একটি মর্গে রয়েছে মরদেহগুলি। মুসলিমদের ধর্মীয় রীতি ও অনুভূতির তোয়াক্কা না করেই কোয়ারেন্টাইন নীতি মেনে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন লঙ্কান অ্যাটর্নি জেনারেল দাপ্পুলা ডি লিভেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই গত বুধবার ৫টি মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাকিগুলিও পুড়িয়ে ফেলা হবে। তবে সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করেছেন স্থানীয় মুসলিমরা। মরদেহ পোড়ানো আটকাতে অন্তত ১২টি আবেদন জমা পড়েছে লঙ্কান সুপ্রিম কোর্টে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও একাধিক নাগরিক অধিকার সংস্থার দাবি, মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়ে মরদেহ পোড়ানো খুবই অন্যায়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা সহায়ক রিহাব মাহামুর বলেন, আন্তর্জাতিক নির্দেশিকায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, করোনায় মৃতদের মরদেহ মাটিচাপা বা দাহ করা যেতে পারে। তার অভিযোগ, শ্রীলঙ্কায় মুসলিম সম্প্রদায়কে আরও কোণঠাসা করতেই এটা করা হচ্ছে।
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) লঙ্কান সরকারকে মুসলিমদের মরদেহ কবর দেওয়ার অনুমতি জানিয়েছিল। তবে সেই আহ্বানে শ্রীলঙ্কা সরকারের সাড়া দেওয়ার কোনও লক্ষণ এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা রয়েছে শ্রীলঙ্কায়। যার ১০ শতাংশ মুসলিম। ২০১৯ সালের এপ্রিলে কলম্বোর একাধিক চার্চে জঙ্গি হামলার পর মুসলিমদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অভিযোগ, শ্রীলঙ্কায় করোনা মহামারির জন্যে মুসলিমদের দায়ী করে প্রচারণা চালাচ্ছে স্থানীয় কিছু গণমাধ্যম।
গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।