বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতি করা আচরণ অত্যন্ত বেদনাদায়ক: রবিশঙ্কর
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারি নিয়ে আজ সরব হলেন ভারতের আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যে ব্যক্তি বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান, তার বিরুদ্ধে এই ধরনের বিচার কেমন ধরনের ন্যায়বিচার?”
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি
ইসকনের প্রাক্তন বিশিষ্ট নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সোমবার ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। রংপুরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে এই গ্রেফতারি ঘটে। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং মঙ্গলবার ঢাকা আদালত তার জামিন নাকচ করে।
শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের প্রতিক্রিয়া
এক ভিডিও বার্তায় শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি যে আচরণ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন ধর্মীয় নেতার দায়িত্ব। আজ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এবং এমন একজন ব্যক্তিকে লক্ষ্য করা হচ্ছে, যিনি ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।”
তিনি আরও বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন, যা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। তিনি কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেননি, কাউকে আঘাত করেননি। তিনি ভয় এবং অসহায়তায় থাকা মানুষকে সাহস জোগাচ্ছিলেন। এটা একজন ধর্মীয় নেতার দায়িত্ব।”
শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন, যেন এই ধর্মগুরুকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হয়।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারত সরকার এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, মূর্তি এবং মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। অথচ এই ঘটনাগুলির অপরাধীরা মুক্ত, এবং শান্তিপূর্ণভাবে বৈধ দাবি জানানো এক ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিক্ষোভ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং ধর্মীয় নেতাদের ওপর দমনমূলক পদক্ষেপ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজর।