‘দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ছিল ২৯.৭ শতাংশ, এখন তা কমে ৯.৭ শতাংশ’
ওয়াশিংটন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে এক সাক্ষাতের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
ঐ সময় তিনি ট্রাম্পকে বলেন, তিনি তাঁর জমি হারিয়েছেন, তাঁর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ধরনের ঘটনায় দায়ী কে? ট্রাম্পের এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা জবাব দেন, মুসলিম মৌলবাদী গোষ্ঠীরা এর জন্য জন্য দায়ী এবং তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়।
আজ (রবিবার) তিনি তাঁর বক্তব্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘নিখোঁজ’ হওয়ার এই পরিসংখ্যান তিনি কোথায় পেলেন? এই পশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, সরকারি পরিসংখ্যান থেকে তিনি এই তথ্য দিয়েছেন।
প্রিয়া সাহা বলেন, ২০০১ সালের পরিসংখ্যানে সংখ্যালঘুদের ওপর একটি চ্যাপ্টার রয়েছে। সেনসাস (আদমশুমারি) অনুসারে দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২৯.৭ শতাংশ। এখন তা কমে ৯.৭ শতাংশ।
প্রিয়া সাহা বলেন, অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত ২০১১ সালে এক গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের লোক ‘হারিয়ে যাচ্ছে’। ঐ গবেষণা কাজের সাথে আমিও জড়িত ছিলাম। সুতরাং আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত বলে জানান প্রিয়া সাহা।
নিখোঁজ হওয়া বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, সংখ্যালঘুদের শতকরা ভাগ যদি এখনও একই রকম থাকতো তাহলে বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ বেশি হতো। সেটাই আমি বলতে চেয়েছি।
এ মানুষগুলো কোথায় গেছে? গুম হয়ে গেছে নাকি কোথাও চলে গেছে? – এরকম এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি একজন সিনিয়র সাংবাদিক, সচেতন মানুষ, সকল সচেতন মানুষ জানেন কোথায় গেছে, কী হয়েছে।
প্রিয়া সাহা সাক্ষাৎকারে পিরোজপুর জেলায় তাঁর নিজের গ্রামের এবং পরিবারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তাঁর গ্রামে ২০০৪ সালেও ৪০টি হিন্দু পরিবার ছিল যা কমতে কমতে ১৩টিতে দাঁড়িয়েছে। কোথায় গেছে তারা- সাংবাদিকের এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, আপনাদেরই তা দেখার কথা, রাষ্ট্রের দেখার কথা।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালে তাঁর বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়, এবং তাঁর পরিবারের বহু জমি-জমা স্থানীয় একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হাতিয়ে নেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬ দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।