‘পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস বেলুচিস্তানের জন্য কালো দিবস, মানব ইতিহাসের ভয়াবহ দিন’
কুয়েটা: পাকিস্তান কব্জা থেকে আলাদা হয়ে নিজের একটি স্বতন্ত্র পরিচয়ের আশায় বিদ্রোহ অব্যাহত বেলুচিস্তানে। বেলুচ পিপলস কংগ্রেসের প্রধান নায়লা কাদরি বেলুচ (Naela Quadri Baloch) বললেন, পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস মানবজাতির ইতিহাসে ‘কালো দিবস’। দেশটির সেনাবাহিনী অব্যাহতভাবে হত্যা, ডাকাতি, ধর্ষণ, মানুষকে ধর্মান্তরিত এবং বেলুচিস্তান দখল করে রেখেছে।
নায়লা কাদরি বেলুচ বলেন, ১৪ আগস্ট সেই দিন—যেদিন ধর্মান্তরিত পাঞ্জাবিরা তাদের নিজের মাতৃভূমি ভারতের সঙ্গে বেঈমানি করে নিজের দেশকে বিভক্ত করেছিল। ব্রিটিশদের স্বার্থের জন্য তারা দেশ ভাগ করেছিল এবং বহু বছর ধরে তারা ব্রিটিশ স্বার্থে কাজ করেছে। এক সময় তারা ছিল আমেরিকার উপনিবেশ, এখন তারা চিনাদের উপনিবেশ।
নায়লা কাদরি বেলুচ বলেন, পাঞ্জাবিদের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের কোন মানে নেই। পাকিস্তানের দ্বারা বেলুচিস্তান দখলকৃত হয়েছে। বেলুচদের জন্য ১৪ আগস্ট হলো নিকৃষ্ট দিন, মানব ইতিহাসের গণহত্যার দিনগুলির মতো সবচেয়ে ভয়াবহ দিন।
নায়লা কাদরি বলেন, বেলুচ, সিন্ধি, পশতুন, মহাজিরি, পাক অধিকৃত কাশ্মীরিরা, বালতি, খ্রিস্টান ও হিন্দুরা পাকিস্তানে বন্দীর জীবনযাপন করছে। এখানে সেনাবাহিনীই একমাত্র স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। হত্যা, ছিনতাই, ধর্ষণ, মানুষকে ধর্মান্তরিতকরণ এবং তাদের জমি বিক্রি ও দখল করছে সেনাবাহিনী।
উল্লেখ্য, বেলুচিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তান, দক্ষিণ-পশ্চিম আফগানিস্তান, দক্ষিণ-পূর্ব ইরান এবং সর্ব দক্ষিণে আরব সাগর। প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার বেলুচিস্তান জোর পূর্বক দখল করে নেয় পাকিস্তান। বেলুচিস্তানের বিদ্রোহে ফুঁসে উঠেছে পাকিস্তান হতে আলাদা হয়ে নিজের একটি স্বতন্ত্র পরিচয়ের আশায়।
বেলুচিস্তান পাকিস্তানের জ্বালানী, পারমাণবিক অস্ত্রের বড় মজুদ এবং পরীক্ষাগার হিসেবে খ্যাত। চিনের অর্থায়নে এখানে নির্মিত হয়েছে গোয়াদর বন্দর। এই বন্দর দিয়ে বাণিজ্য করিডরের মাধ্যমে বাণিজ্যপণ্য যাবে সরাসরি চিনে। পুরো আরব সাগরে চিনের আধিপত্য নিশ্চিত করতে এই বন্দরের গুরত্ব অপরিসীম। এরই প্রেক্ষিতে ২০৩০ সালের মধ্যে সেখানে ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই বিনিয়োগের ফলে বেলুচিস্তানে গড়ে উঠবে বিদ্যুৎকেন্দ্র, পাইপলাইন সংযুক্তকরণসহ বহু অবকাঠামোগত কাজকর্ম।


