১৯৭১ সালে রমনা কালীমন্দির গুঁড়িয়ে দেয় বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী
ঢাকা: মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর রাত ২৫ মার্চ। ১৯৭১ সালের এ রাতে বাঙালির জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত নেমে এসেছিল। বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাপুরুষের মতো মধ্যরাতে পূর্ব পাকিস্তানে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।
স্বাধীনতাকামীদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইয়াহিয়ার লেলিয়ে দেয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। পূর্বপরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী তারা ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটনা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন লিখেছেন, সে রাতে সাত হাজার মানুষকে হত্যা এবং আরও তিন হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হয়। বাংলাদেশ হয়ে ওঠে শকুনতাড়িত শ্মশান ভূমি।
বাংলাদেশের দেড় হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাক্ষী রমনা কালীমন্দির বা রমনা কালীবাড়ি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী গণহত্যা চালানোর পাশাপাশি ডিনাইমাইট দিয়ে মন্দিরটি ধ্বংস করে দেয়। হত্যা করা হয় মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় একশো সন্ন্যাসী, ভক্ত ও সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষকে। রমনা কালী মন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ ‘গণতদন্ত কমিশন গঠিত হয় ২০০০ সালের ২৭ মার্চ।
কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় এক শ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর নতুন করে নির্মিত হয়েছে শ্রীশ্রী কালীমন্দির ও শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রম। মন্দিরের প্রধান ফটক দিঘির উত্তর-পূর্ব পাশে প্রধান ফটকের বাইরে রয়েছে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ নিহত শহিদদের তালিকাসংবলিত একটি স্মৃতিফলক।