কন্যাসন্তানের জন্ম, রাগে গলা টিপে হত্যা করে নদীর ধারে ফেলে দিলেন বাবা
মুর্শিদাবাদ: কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ারই যেন ‘অপরাধ’! সেই ‘অপরাধ’-এ নিজের তিন মাসের শিশুকন্যাকে গলা টিপে হত্যা করে নদীর ধারে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত মিকুল শেখকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের আঙ্গারপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভরতপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত মিকুলকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার মিকুলকে আদালতে হাজির করা হয়।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মিকুল শেখ আঙ্গারপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় থাকে। রিকশা চালিয়ে সংসার চালায় সে। প্রথমবার বিয়ের কিছুদিন পরেই হিজলের রানিপুর গ্রামের রেহেনা বিবির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। রেহেনাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে মিকুল। দুই স্ত্রীকে নিয়ে তার টানাপোড়েন চলছিল। এরমাঝেই আবার মিকুলের দ্বিতীয় স্ত্রী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। কন্যাসন্তান জন্মের পরেই পরিবারে অশান্তি বাড়তে থাকে।
রেহেনার অভিযোগ, মিকুল তাকে ভালোবেসে বিয়ে করেও পণের জন্য অত্যাচার করত। মেয়েটা জন্মানোর পর থেকেই ওর অত্যাচার আরও বাড়ে। প্রায় দিনই মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে আমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। মেয়ে হয়েছে বলে মারধরও করত। মেয়ের জন্ম দিয়ে আমি কী অপরাধ করেছি, বলুন তো?
রেহেনা বিবির অভিযোগ, এ দিন সকালে মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরে মিকুল। রেহেনাকে বাড়ির সামনে দেখতে পেয়ে বেধড়ক মারধর করে। রেহেনা ও তাঁর কন্যা সীমাকে খুনের হুমকি দেয় মিকুল। রেহেনা বলেন, মেয়ে হওয়ায় মিকুল তার তিন মাসের মেয়েকে প্রাণে মারার আগেও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি। বুধবার সকালে যখন স্নান করছিলাম তখন মিকুল মেয়েকে নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গলা টিপে খুন করে। গ্রামের লোকেরাই শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপরই শিশুটিকে মৃত বলে জানায় চিকিৎসকরা। আমি মিকুলের শাস্তি চাই।