Friday, June 20, 2025
Latestদেশ

৩০ বছর পরেও কাশ্মীরে ফিরতে ব্যাকুল নিজের দেশে শরণার্থী হওয়া কাশ্মীরি পণ্ডিতরা

শ্রীনগর: ১৯৯০ সালের ১৯ জানুয়ারি ধর্মীয় হিংসার কারণে কয়েক লাখ কাশ্মীরি পন্ডিত প্রায় এক বস্ত্রে কাশ্মীর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। ঘটনার ৩০ বছর পার হয়ে গেলেও নিজের দেশে শরণার্থী হওয়া সেইসব হিন্দু কাশ্মীরি পন্ডিতরা কাশ্মীরে ফিরতে পারেননি। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কাশ্মীর থেকে বাতিল করা হয়েছে ৩৭০ ধারা।

কাশ্মীর থেকে হিন্দু পন্ডিতদের নির্বাসনের ৩০ বছর পূর্তিতে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের ভিডিও পোস্ট করে আওয়াজ তুলছেন ‘হাম আয়েঙ্গে আপনে বতন’ – যার অর্থ ‘নিজেদের মুলুকে আমরা ঠিক ফিরব’। টুইটারে ট্রেন্ডিং চলছে #HumWapasAayenge। কাশ্মীর পণ্ডিতরা ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেনন, আমরা ফের উপত্যকায় ফিরব।

এক বস্ত্রে কাশ্মীর ছাড়তে বাধ্য হয়ে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা নিজের দেশেই এখন ‘শরণার্থী’। গত ৩০ বছর ধরে ভারতের নানা প্রান্তে তাঁরা শরণার্থীর মতো জীবন যাপন করছেন। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর মোদী সরকার দাবি করেছিল, এবার পন্ডিতদের ফিরে আসার পথ প্রশস্ত হবে।

নামী মঞ্চ অভিনেতা চন্দন সাধু, একজন কাশ্মীরি পন্ডিত। তিনি টুইটারে লিখেছেন, হাম আয়েঙ্গে আপনা ওয়াতন হাজীসাহাব অওর এহি পে দিল লাগায়েঙ্গে। এহি মরেঙ্গে অওর এহিকে পানি মে হামারি রাখ বহায় যায়েগি। – যার অর্থ, হাজীসাহাব, আমি ঠিক একদিন ফিরব – ওখানেই মন বসাব, ওখানেই মরব, আর কাশ্মীরের নদীতেই আমার ছাই ভেসে যাবে।


১৯৯০ সালের ১৯ জানুয়ারির রাতের সেই ভয়াবহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নমিতা কাউল, যিনি এখন জয়পুরে পন্ডিতদের ক্যাম্পে থাকেন, তিনি জানান, শীতের সেই রাতে আমরা ঘরে বসে টিভিতে সিনেমা দেখছিলাম। হঠাৎ চারদিক থেকে ‘আল্লা হু আকবর’ ধ্বনি উঠতে লাগল, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ আর ‘ভারতীয় কুকুররা ফিরে যাও’ স্লোগানে আমরা কেঁপে উঠেছিলাম।

নমিতা কাউল জানান, মসজিদ থেকে হাতিয়ার নিয়ে বেরিয়ে দলে দলে মানুষ আমাদের গলি-মহল্লা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল। বলা হল মেয়েরা থাকবে, কিন্তু পুরুষদের চলে যেতে হবে। দেওয়া হয়েছিল হত্যার হুমকিও। সেদিনের কথা ভাবলে আজও চোখ জলে ভিজে আসে, যে আমাদের জীবনে অমনটাও ঘটেছিল!