Wednesday, January 22, 2025
রাজ্য​

জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা আদালতের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা দিল বারুইপুর আদালত। মাত্র ৬৩ দিনের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের বিচারব্যবস্থায় এক নজির স্থাপন করেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ।

গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় ১২ বছরের নাবালিকা। গভীর রাতে বাড়ির কাছের জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, মুস্তাকিন সর্দার নাবালিকাকে সাইকেলে তুলে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুন করে। তার শরীরে ৩৮টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় দ্রুত তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেন। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠিত হয়। ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেয় সিট। ৫ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় ৩৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

সরকারি আইনজীবীর মতে, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি বলেন, “অপরাধী নৃশংসতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে। এই ধরনের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।”

পুলিশের প্রতিক্রিয়া

রায়ের পর রাজ্য পুলিশের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা হয়, “জাস্টিস ফর জয়নগর!’’। সেখানে বলা হয়, “নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় মাত্র ৬৩ দিনের মধ্যে ফাঁসির আদেশ পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

এই রায় ঘোষণার পর আরজি কর কাণ্ডের প্রসঙ্গও উঠে আসে। আরজি করের নিহত মহিলা চিকিৎসক এবং জয়নগরের নাবালিকার জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে আন্দোলন করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু চার মাস পেরিয়ে গেলেও আরজি কর-কাণ্ডে এখনও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

জয়নগরের দ্রুত বিচারে সাধারণ মানুষ আশার আলো দেখলেও অন্যান্য মামলায় বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই রায় এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলেও প্রত্যেক ঘটনায় সমান গুরুত্ব এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। প্রশ্ন তুলেছেন, আরজি কর কান্ডের বিচারে এত দেরি হচ্ছে কেন?