ইসরোর স্প্যাডেক্স মিশনের সফল উৎক্ষেপণ, মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) একবার আবার মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে মাইলফলক স্থাপন করল। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে স্প্যাডেক্স (Space Docking Experiment) মিশনের সফল উৎক্ষেপণ দেশের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
মিশনের লক্ষ্য ও সাফল্য
স্প্যাডেক্স মিশনের মূল উদ্দেশ্য মহাকাশে ডকিং প্রযুক্তির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। ইসরোর বিজ্ঞানীরা এটিকে ভবিষ্যতে ভারতীয় মহাকাশ স্টেশন (BSS) নির্মাণ এবং চন্দ্রযান-৪ মিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে দেখছেন।
উৎক্ষেপণটি পিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে করা হয়, যা দুটি স্যাটেলাইট—চেজার (SDX01) এবং টার্গেট (SDX02)—একই কক্ষপথে স্থাপন করে। প্রথম ধাপে এই স্যাটেলাইটগুলোকে ৫ কিলোমিটার দূরে রাখা হয়, এবং পরে তাদের ৩ মিটারের কাছাকাছি এনে ডকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য
চেজার ও টার্গেট স্যাটেলাইট: চেজার স্যাটেলাইট টার্গেটকে লক্ষ্য করে ডকিং করবে।
রোবোটিক বাহু: একটি টেথারড পদ্ধতির মাধ্যমে স্যাটেলাইটের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে, যেখানে রোবোটিক বাহু একটি হুকের মাধ্যমে টার্গেটকে টেনে আনবে।
উচ্চতায় সংযোগ: এই প্রক্রিয়া পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় সম্পন্ন করা হবে।
মহাকাশ গবেষণার নতুন পথ
স্প্যাডেক্স মিশনের সাফল্যের মাধ্যমে কক্ষপথে স্যাটেলাইট সার্ভিসিং এবং রিফুয়েলিংয়ের সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে। একইসঙ্গে এটি চন্দ্রযান-৪ মিশনের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে, যার মূল উদ্দেশ্য চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ইসরো জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ডকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন মডিউল মহাকাশে পাঠানো হবে। এগুলো পৃথিবী এবং চাঁদের কক্ষপথে সংযুক্ত করে আরও জটিল মহাকাশ অভিযানের পথ প্রশস্ত করবে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা
ইসরোর স্প্যাডেক্স মিশন শুধু একটি প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়, এটি ভারতের মহাকাশ গবেষণার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য এই মাইলফলক গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের মহাকাশ গবেষণার অগ্রগতির উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে।