Tuesday, March 25, 2025
দেশ

জুতা কেনার টাকা না থাকায় খালি পায়েই স্কুলে যেতেন কে শিবন

বেঙ্গালুরু: ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যান ড. কে শিবনের জীবন, জীবন যুদ্ধের গল্প শুনলে মনে হবে এটা কি সত্যি না কোনও ছবির চিত্রনাট্য! কলেজে পড়ার আগে পর্যন্ত কখনও পায়ে জুতো পরতে পারেননি কে শিবন। সামর্থ্য ছিল না জুতো কেনার স্কুলে যেতেন খালি পায়েই!

কৃষক পরিবারের ছেলে শিবন পড়াশোনার শেষে প্রতিদিন বাবাকে সাহায্য করতেন চাষের কাজে। বাবাকে সাহায্য করতে হবে বলে বাড়ির কাছের স্কুল-কলেজেই পড়াশোনা করেন। ভারতের ‘রকেট ম্যান’ ইসরোর চেয়ারম্যান কাইলাসাভাডিভো শিবন বা কে শিবনের পড়াশোনা শুরু সরকারি তামিল ভাষার স্কুলে। বাবা গ্রীষ্মকালে আমের চাষ করতেন। পড়ার ফাঁকে বাবারকে আম বাগান পরিচর্যার কাজে সাহায্য করতেন শিবন।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়ার আগে পর্যন্ত প্যান্ট কিনে দেওয়ার পয়সা ছিল না বাবার। তাই ধুতিই পরতেন শিবন। অভাবের সংসার তাই আম বাগান পরিচর্যার কাজে মজুর রাখার সামর্থ ছিল না বাবার। ফলের দোকানও চালিয়েছেন একটা সময়ে। তার জন্য কোনও দিন লজ্জাবোধ হয়নি। শিবন বলেন, অভাব মানুষকে অনেক শক্তপোক্ত করে তোলে। আত্মবিশ্বাসী মন তৈরি হয়। ঘরে-বাইরে নিজেকে প্রমাণ করার জেদ চেপে গিয়েছিল। এই জেদই পরবর্তীকালে আমার স্বপ্নপূরণের অন্য়তম চাবিকাঠি হয়ে ওঠে।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চেয়েছিল শিবন, বাবা বলেছিলেন, সামর্থ কোথায়। বিএসসি পড়ো। ভালো নম্বর পেলে জমি বিক্রি করে তোমাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াব। শিবন তাতেই রাজি হয়। প্রথম দিন শিবনকে কলেজে খালি পায়ে দেখে অন্য ছেলেরা হাসি-মস্করা করে। চাষির ছেলে বলে টিপ্পনীও শুনতে হয় তাঁকে। শেষে একজোড়া জুতোও জুটল, তবে পুরনো।

অঙ্কে বিএসসি, অনার্সে দারুণ রেজাল্ট করে ১৯৮০ সালে শিবন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হলেন মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে। ১৯৮২ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে (আইআইএসসি) অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে মাস্টার্স করেন শিবন। এরপর ইসরোতে চাকরি।