বাংলাদেশের নাগরিক তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান! এক ব্যক্তিকে বাবা সাজিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব! মালদায় বড় জালিয়াতির অভিযোগ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুনের বিরুদ্ধে বড়সড় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। ওবিসি শংসাপত্রে জাল নথি পেশ এবং বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও পঞ্চায়েত প্রধান পদে বসার অভিযোগে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কী অভিযোগ?
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাভলি খাতুন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি কুশিদা এলাকার এক ব্যক্তিকে নিজের বাবা সাজিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব পান। তারপর এলাকার ১১ জন বাসিন্দার নথি ও সই জাল করে ওবিসি শংসাপত্র জোগাড় করেন। এর ভিত্তিতে কংগ্রেসের প্রতীকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভ করেন। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব নেন।
কোর্টে মামলা এবং বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে
লাভলি খাতুনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিরোধী দলের পাঁচ জন সদস্য। বিচারপতি অমৃতা সিনহার ডিভিশন বেঞ্চে একাধিকবার শুনানির পর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
ওবিসি শংসাপত্রের জন্য ব্যবহার করা সাক্ষীদের দাবি, তারা কখনোই তাদের নথি ও সই ব্যবহার করার অনুমতি দেননি।
যে মোস্তফাকে লাভলির বাবা হিসেবে দেখানো হয়েছে, তার প্রকৃত মেয়ে লাভলি নন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য
বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজ আলম বলেন, “আমার নথি ও সই ব্যবহার করা হয়েছে আমার অনুমতি ছাড়াই। শুনানির সময় আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে এটি জালিয়াতি। গ্রামের বাকিরাও একই কথা বলেছে।”
লাভলির স্বামীর বক্তব্য
লাভলি খাতুনের স্বামী রবিউল আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “এই দাবিগুলির কোনো ভিত্তি নেই। সবটাই মিথ্যে অভিযোগ।”
শাসক দলের প্রতিক্রিয়া
এলাকার বিধায়ক নীহার রঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, “লাভলির কাগজপত্র ব্লকের আধিকারিকরা পরীক্ষা করেছেন। এর বিস্তারিত তথ্য তারাই দিতে পারবেন।”
প্রশাসনিক জবাবদিহি
এই ঘটনা প্রশাসনিক নজরদারির বড়সড় ত্রুটিকে সামনে এনেছে। লাভলি খাতুনের মতো একজন বাংলাদেশি নাগরিক কীভাবে ভারতের পঞ্চায়েত প্রধান হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। ওবিসি শংসাপত্র এবং নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্তের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।