‘এভাবে চললে তো সব আসনেই হারবো’, সাংসদের বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে তৃণমূল
হাওড়া: বিধানসভা ভোটের আগে একের পর এক নেতা গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। যা নিয়ে বেকাদায় রাজ্যের শাসক দল। এর মধ্যেই দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (Prasun Banerjee)। গত শুক্রবার তৃণমূলের ২৩ বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে হাওড়া সদর দফতরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই অনুষ্ঠানে সমবায় মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায় উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি বাকি দুই মন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এরপরেই বেসুরো হলেন হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশিষ্ট এই ফুটবলার প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন দলের বিরুদ্ধে। এমনকি, ভবিষ্যতে আর দলের যে কেউ যেন তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগও না রাখেন বা দলের কোনও অনুষ্ঠানে তাঁকে যেন আর না ডাকা হয় সেটাও জানিয়ে দেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, অভিমানের সুরে তিনি বলেন, তৃণমূল আর আগেকার মতো নেই।
আক্ষেপ করে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী নির্বাচনে হাওড়া জেলার ১৬ টি বিধানসভা আসনেই হারবে তৃণমূল। তিনি দাবি করেন, দলের গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। তাই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাঁর দাবি, যে সময় তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, সে সময়ের দল আর এখনকার দলের মধ্যে বিরাট পার্থক্য হয়ে গেছে।
অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে যখন তৃণমূলে যোগ দিই, তখন বেশ সুন্দর ছিল দল। এখন দলে গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। কারও সঙ্গে কারও বনিবনা নেই। কেউ কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করে না। দল আর আগের মতো নেই। লক্ষ্ণীরতনের তো দেখাই নেই! মানুষের সুখ-দুঃখবোঝার দরকার ছিল। কিন্তু সবাই যেন কেমন চুপ করে গেল। কেউ যোগাযোগও রাখে না! দলটা কেমন যেন হয়ে গেল। জেলায় কমিটি তৈরি হল না এখনও? কমিটি হলে দলটা ভালো চলত। এ সব দেখে মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে। আই অ্যাম শকড! এ ভাবে চললে হাওড়ার ১৬টি আসনের সবকটিই হারাবো।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। তবুও বিধানসভা ভোটের আগে নিজের ‘ক্ষোভ’ দেখাতে রাজি নন প্রসূন। বরং দলকে জেতাতে লক্ষ্মী, রাজীব এবং অরূপকে একসঙ্গে বসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে তিনি নিজে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত দীর্ঘ ৫ বছর ধরে।