Thursday, January 23, 2025
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে BCS মেরিট লিস্ট থেকে বাদ হিন্দু চাকরিপ্রার্থীরা, তুমুল বিতর্ক 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার নতুন মেরিট লিস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী, ১৬৮ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দু প্রার্থীর নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে।

নতুন লিস্টে বদল ও বাদ পড়া প্রার্থীদের তালিকা

গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত মেরিট লিস্ট বাতিল করে নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। নতুন তালিকায় প্রশাসনিক, পুলিশ, কাস্টমস, ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্যাডারে হিন্দু প্রার্থীদের নাম বাদ পড়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে।

বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়া হিন্দু প্রার্থীদের সংখ্যা:

প্রশাসনিক ক্যাডার: বাদ ২৬ জন, এর মধ্যে ১৩ জন হিন্দু।

পুলিশ: বাদ ৮ জন, এর মধ্যে ২ জন হিন্দু।

কাস্টমস: বাদ ৩ জন, এর মধ্যে ১ জন হিন্দু।

ট্যাক্স: বাদ ৭ জন, এর মধ্যে ৫ জন হিন্দু।

রেলওয়ে: বাদ ১ জন, যিনি হিন্দু।

ফুড: বাদ ৩ জন, এর মধ্যে ২ জন হিন্দু।

প্রতিটি ক্যাডারে বাদ পড়া হিন্দু প্রার্থীদের নাম প্রকাশ্যে আসার পর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

মৌলবাদীরা কী বলছে? 

এ বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তথা জামাত-ই-ইসলামির কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। দেশের ৯০ শতাংশ মুসলিম। ফলে পুলিশ হোক কিংবা সরকারি চাকরি, মুসলিমরাই অগ্রাধিকার পাবেন।”

সমালোচনা ও আইনি পদক্ষেপের দাবি

বিচারক ও প্রাক্তন ইস্কন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ দাবি করেছেন, “পাস করার পরও হিন্দু প্রার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এ নিয়ে একাধিক নথি নিয়ে কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

হাসিনার পতনের পর হিন্দুদের উপর নির্যাতন বেড়েছে

বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন ও বৈষম্যের অভিযোগ নতুন নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। পুলিশের চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হিন্দুদের নিয়োগ বন্ধের পরিকল্পনার অভিযোগ উঠছে।

সরকারি প্রতিক্রিয়া

সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অসমর্থিত সূত্রের দাবি, বাদ পড়া ১৬৮ জনের সবাই হিন্দু।

বিসিএস পরীক্ষার মেরিট লিস্ট নিয়ে বিতর্ক বাংলাদেশের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার চ্যালেঞ্জকেই সামনে নিয়ে এসেছে। এ ধরনের অভিযোগ শুধু সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে না, বরং সিভিল সার্ভিসের স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন তুলছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি উঠছে।