স্যালুট! মাতৃত্ব ও কর্তব্য, দুটোই একসঙ্গে সামলাচ্ছেন ঝাঁসির পুলিশকর্মী অর্চনা
ঝাঁসি: সত্যিই যেন ঝাঁসির রানি তিনি। পিঠে শিশু পুত্রকে বেঁধে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন সে যুগের রানি লক্ষ্মীবাঈ। আর এ যুগের রানি ডিউটি করছেন সন্তানকে টেবলের উপর ঘুম পাড়িয়ে রেখে। একদিকে মাতৃত্ব অপরদিকে কর্তব্য। কোনওটাই ফেলনা নয়। তাই দুই দায়িত্বেই অবিচল থাকলেন তিনি। আরও একবার দুনিয়াকে দেখিয়ে দিলেন মেয়েরা সব পারে।
‘মাদার কপ’। এক মহিলা পুলিশের ছবি ঘিরে ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একদিকে সামলাচ্ছেন প্রশাসনিক দায়িত্ব। অন্যদিকে একই সময়ে সামলাচ্ছেন ৬ মাসের শিশু সন্তাকেও। একই সঙ্গে স্নেহময়ী মায়ের ভূমিকা আর সেই সঙ্গে পেশাদারীত্ব। এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শিশুকন্যাকে টেবিলের উপর শুইয়ে রেখেছেন উর্দিধারী মা। পাশে রয়েছে সন্তানের দুধের বোতলও। ঘুমন্ত সন্তানকে দেখভাল করতে করতেই একমনে নিজের কাজ করে চলেছেন খাঁকি পোশাকের সেই দশভূজা। ঝাঁসির কোতয়ালি থানায় কর্মরত ওই মহিলা পুলিশকর্মীর নাম অর্চনা জয়ন্ত।
Meet ‘MotherCop’ Archana posted at kotwali jhansi for whom the duties of motherhood & the department go side by side !
She deserves a Salute !! pic.twitter.com/oWioMNAJub— RAHUL SRIVASTAV (@upcoprahul) 27 October 2018
অর্চনা জয়ন্ত নামের এই কনস্টেবল এলাকায় পরিচিত ‘মাদার কপ’ নামে। একই সঙ্গে একার হাতে নিজের বাচ্চা সামলাচ্ছেন, গাফিলতি করছেন না কর্তব্যেই। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছে নেটদুনিয়া। কথায় আছে, যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। অর্চনার ক্ষেত্রেও বিষয়টা সে রকমই। তিনি এক দিকে থানার কাজও সামলান, আবার সমান তালে মাতৃত্বের দিকটাও খেয়াল রাখেন।
আদতে অর্চনা আগ্রার বাসিন্দা। কিন্তু কর্মসূত্রে তাঁকে থাকতে হচ্ছে ঝাঁসিতে। স্বামী পরিবার সঙ্গে থাকেনা। অর্চনার স্বামী গুরগাঁয়ের বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ৷ অন্যদিকে অর্চনার বড় মেয়ে কানপুরে তাঁর দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে থাকে। কিন্তু অর্চনার সঙ্গে রয়েছে ৬ মাসের সন্তান। কর্তব্যের বেড়াজালে পড়ে সন্তানের লালন-পালনে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে শিশুটিকে নিজের সঙ্গেই নিয়ে থানায় যান অর্চনা। দিনভর দায়িত্বও সামলান, মেয়ের দেখাশোনাও করা হয়।
কিন্তু কিভাবে দুদিক একসঙ্গে সামাল দেন অর্চনা? সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে নবভারত টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অর্চনা বলেন, পুলিশের ডিউটি খুব কঠিন। অনেক সময় আমাদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়। তারমধ্যে মেয়ের জন্য সময় বের করা সহজ নয়। তবে কোনও কিছুই অসম্ভবও নয়। আমার কলিগদের সাহায্যে এটা আমি করতে পারি। এমনকি আমি যখন ডিউটিতে বাইরে যাই আমার সহকর্মীরা অঙ্কিতার খেয়াল রাখে।
অর্চনা জানান, তিনি আগ্রাতে ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছেন। ওখানে গেলে অঙ্কিতাকে তার পরিবার দেখাশোনা করতে পারবে। আর তার পক্ষেও ভালো ভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। এদিকে অর্চনার দুই কাজ সামলানোর দৃশ্য দেখে তাঁকে পুলিশ বিভাগ পুরস্কৃত করতে যাচ্ছে।