প্রাণভয়ে পালাতে বাধ্য হলেন পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী
নিউইয়র্ক: জঙ্গি দমনের নামে নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। অন্তত এক ডজন নারীর যৌন নির্যাতনের ঘটনা ফাঁস করায় বিপদে পড়েন পাকিস্তানের নারী অধিকার কর্মী গুলালাই ইসমাইল। বেশ কয়েকবার গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তাঁর ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে পাক সরকার। বেশ কয়েকবার প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ায় কয়েকমাস আত্মগোপনে থাকা পাকিস্তানের নারী সমাজকর্মী গুলালাই ইসমাইল যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হিংস্রতার ঘটনা ফাঁস করায় ৩২ বছর বয়সী গুলালাই এই মুহূর্তে পাকিস্তান সরকারের হিটলিস্টে আছেন। আপাতত গুলালাই নিউইয়র্কে তাঁর বোনের বাসায় আছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের নামে নারীদের ওপর বর্বর যৌন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এই সত্য সামনে আনার জন্য তাঁর ওপর ক্ষেপেছে পাকিস্তান সরকার।

নারী অধিকার কর্মী হিসেবে সুপরিচিত গুলালাই ইসমাইল। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি মানবাধিকার নিয়ে, বিশেষত নারী ও মেয়েদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্টবাদী সমালোচক। গুলালাই মাত্র ১৬ বছর বয়সে প্রথম নারী অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন। ২০১৩ সালে গুলালাই ১০০ জন নারীকে নিয়ে একটি সংগঠন শুরু করেন। এরপর নারীদের সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ রোধে কাজ শুরু করে সংগঠনটি। কাজের জন্য অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন গুলালাই।
গুলালাইয়ের বাবা মহম্মদ বলেছেন, তাঁর মেয়েকে গত বছর পর্যন্ত তিনবার গ্রেফতার করেছে পাকিস্তানের পুলিশ। সর্বশেষ চলতি বছরের মে মাসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ‘রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম’ এবং ‘সহিংসতা প্ররোচিত’ প্রদর্শন। কিন্তু আসল ঘটনা ছিল, গুলালাই তখন পাক সেনাবাহিনী কর্তৃক ১০ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন। এখনও গুলালাইয়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে ৬টি মামলা রয়েছে।