জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বনেতারাই আমাদের ব্যর্থ করছেন: গ্রেটা থানবার্গ
নিউ ইয়র্ক: সোমবার জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে একেবারে শুরুতেই বক্তব্য রাখেন ১৬ বছরের সুইডিশ পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থানবার্গ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কড়া ভাষায় বিশ্বনেতাদের তুলোধুনো করলেন কিশোরী গ্রেটা। এক আবেগঘন বক্তব্যে গ্রেটা বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য ধংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ আপনারা একের পর এক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন প্রজন্মকে ঠকিয়ে চলেছেন।
উপস্থিত বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে গ্রেটা থানবার্গ বলেন, আমার বার্তা হচ্ছে যে, আমরা আপনাদের পর্যবেক্ষণ করছি। কিশোরী গ্রেটার এই কথায় কারও কারও মুখে হাসি এলেও মুহূর্তেই তা মিইয়ে যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে গ্রেটা জানায়, সবকিছুই ভুল। আমার তো এখানে থাকার কথা ছিল না। সমুদ্রের ওই প্রান্তে স্কুলে থাকার কথা ছিল।
১৬ বছরের সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ জানায়, কিন্তু আপনারা আমাদের ছোটদের কাছে আশার কথা শুনতে এসেছেন। জলবায়ু তৎপরতাকে আলোকপাত করতে পড়াশোনা থেকে কিছুটা সময় ছুটি নিয়ে এসেছে সে। গ্রেটা জানায়, ফাঁকা বুলি আউড়িয়ে আপনারা আমার স্বপ্ন ও শৈশবকে চুরি করেছেন। লোকজন ভোগান্তিতে রয়েছেন, তাঁরা মারা যাচ্ছেন, পুরো প্রাণ-প্রকৃতি ভেঙে পড়ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে গ্রেটা জানায়, একটি ব্যাপক বিলুপ্তি শুরুর মধ্যে রয়েছি আমরা। একটি স্থায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির রূপকথার গল্প হলো- অর্থ, যা নিয়ে আপনারা কথা বলতে পারেন। এত স্পর্ধা আপনারা কোথায় পান? জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে গ্রেটা জানায়, আমরা আপনাদের ওপর নজর রাখব।
”People are suffering, people are dying, entire ecosystems are collapsing. We are in the beginning of a mass extinction and all you can talk about is money and fairytales of eternal economic growth.” Watch Greta Thunberg speak at the UN Monday morning. https://t.co/Akkxm9sXdr pic.twitter.com/ahHKlhbYaE
— WIRED (@WIRED) September 23, 2019
প্রসঙ্গত, গ্রেটা থুনবের্গের জন্ম ২০০৩ সালের ২ জানুয়ারি। গ্রেটা সুইডেনের একজন স্কুল শিক্ষার্থী যিনি ১৫ বছর বয়সে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবিলম্বে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুইডেন সংসদরে বাইরে প্রতিবাদ শুরু করেন। তখন থেকে তিনি জলবায়ু কর্মী হিসেবে পরিচিতি পান। ২০১৮ সালের নভেম্বরে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্কুলে অবরোধের ডাক দেন এবং একই বছর ডিসেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের পর এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
২০১৮ সালের আগস্টে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিবাদ শুরু করেন এবং সেটি সে সময় মিডিয়াতে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ১১২টি দেশের আনুমানিক ১৪ লাখ শিক্ষার্থী তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে জলবায়ু প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। গ্রেটা তাঁর এই কার্যক্রমের জন্য অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৯ সালের মার্চে নরওয়ের তিন জন সংসদ সদস্য তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে।