রণক্ষেত্র সন্দেশখালি, নিহত ৪, নিখোঁজ বহু, রিপোর্ট তলব করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক
বসিরহাট: রাজ্যে লোকসভা নির্বাচন শেষ হলেও এখনো থামেনি ভোট-পরবর্তী সহিংসতা। সবশেষ শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সন্দেশখালি ব্লকের হাটগাছা পঞ্চায়েতের ভাঙ্গিপাড়ায় তৃণমূল ও বিজেপি সংঘর্ষের সময় চারজন নিহত হয়েছে। ঘটনার জন্য বিজেপি-তৃণমূল দু’পক্ষই একে অপরকে দায়ী করা হয়েছে। দলের একাধিক কর্মী নিখোঁজ আছে বলেও দু’দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়। রাতভর পুলিশ ও র্যাফের টহলদারি চলেছে গোটা এলাকাজুড়ে।
বিজেপির দাবি, সংঘর্ষ তাঁদের দলের পাঁচ সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে, তৃণমূলের দাবি, তাদের দলের ৬ জন কর্মী নিখোঁজ। স্থানীয় হাসাপাতালে একজন তৃণমূল কর্মী এবং দুজন বিজেপি সমর্থকের দেহ সনাক্ত করা হয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং পরে সন্দেশখালির ঘটনাই ‘সবথেকে বড় হিংসার ঘটনা’। রবিবার সকালে ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তিদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু দাবি করেছেন, তাঁদের দলের তিন কর্মী- সুকান্ত মণ্ডল, প্রদীপ মণ্ডল, এবং শঙ্কর মণ্ডলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের দলের কর্মী কায়ুম মোল্লার (২৪)। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্য এবং জনসভার মধ্য দিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের।
তৃণমূল ও বিজেপি, দু তরফেই সূত্র মারফৎ জানা গেছে, বিজেপির পতাকা সরানো কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাঁধে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে বহু দোকান এবং বাড়ি ভাঙচুর হয়। অন্যদিকে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছেন, আমাদের মিছিলে হামলা চালায় বিজেপির সাত-আটজন দুষ্কৃতকারী। দলীয় কর্মী কায়ুম মোল্লার মাথায় গুলি করে ও এরপর তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তৃণমূলের মোট ১৮ জন নেতাকর্মী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। দুষ্কৃতকারীদের সবার মাথায় গেরুয়া ফেট্টি বাঁধা ছিল।
গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতা মুকুল রায়। বিজেপির দাবি, রাজ্যে হিংসা ছড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল রায় অভিযোগ করেন, বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ।