প্রয়াত হলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ
গুয়াহাটি: দীর্ঘ লড়াই শেষ, মারা গেলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। সোমবার বিকাল ৫ টা ৩৪ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অসমের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ।
গত বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। সোমবার সকালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খুবই খারাপ বলে জানানো হয়েছিল। তরুণ গগৈর শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর শুনে অসমের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল নিজের নির্ধারিত ডিব্রুগর সফর রদ করে গুয়াহাটি পৌঁছন।
গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তরুণ গগৈর। ৯ জনের চিকিৎসক টিম তাঁর চিকিৎসার নিয়োজিত ছিলেন। মঙ্গলবার শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন তাঁর অনুগামীরা। গুয়াহাটিতেই তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে।
গত আগস্টের শেষের দিকে করোনায় আক্রান্ত হন তরুণ গগৈ। অক্টোবরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি ৷ তবে নভেম্বরের শুরুতে ফের অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
তরুণ গগৈ ১৯৩৬ সালের ১ এপ্রিল অসমের যোরহাট জেলার রাঙ্গাজান চা-বাগানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অসমের যোরহাট গভর্নমেন্ট বয়েজ় স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষালাভ করেন এবং যোরহাটের জে. বি. কলেজ থেকে স্নাতক স্তরে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি প্রথমবার লোকসভায় নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৭, ১৯৮৩ এবং ১৯৯১ সালে তিনি লোকসভার সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যমন্ত্রী) ছিলেন এবং ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তরুণ গগৈ মার্ঘেরিটা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে অসম বিধানসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি আবার লোকসভার সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তরুণ গগৈ অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৬ সালের নির্বাচনেও তরুণ গগৈয়ের নেতৃত্বাধীনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পুনরায় জয়লাভ করে এবং দ্বিতীয়বারের জন্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী পদাভিষিক্ত হন।


