Monday, November 17, 2025
জীবনযাপন

গত ২০ বছরে সারা পৃথিবীতে বিশ্বস্ত বন্ধুর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে

দার্শনিক ফ্রিডরিচ নিটসে বলেছিলেন, “বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে প্রাণরক্ষাকারী ছায়ার মতো। যে তা খুঁজে পেলো, সে একটি গুপ্তধন পেলো।” ইউরিপিদিস বলেছেন, “একজন বিশ্বস্ত বন্ধু দশ হাজার আত্মীয়ের সমান”। এ পি জে আবদুল কালাম বলেছন, ”একটি ভালো বই একশ ভালো বন্ধুর সমান, কিন্তু একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরির সমান।”

সত্যিই তাই জীবনে এমন একজন বন্ধু থাকা খুবই দরকার। কারও যদি বিশ্বস্ত বন্ধু না থাকে যার কাছে সমস্ত কথা বলা যায়, তবে তা নেশাগ্রস্ততার মতোই স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

বন্ধুত্ব নিয়ে অবাক করা তথ্য হল, একজন মানুষের গড়ে সারা জীবনে ৩৯৬ জন ভালো বন্ধু হয়। কিন্তু প্রতি ১২ জন বন্ধুতে মাত্র একজন বন্ধু শেষ পর্যন্ত টিকে যায়। কথায় বলে, বন্ধুত্বে যদি সত্যিই প্রাণের টান থাকে তবে ৫০ বছর কোনও যোগাযোগ না থাকার পরে দেখা হলেও বন্ধুরা একে অপরকে ঠিক আগের মতোই জড়িয়ে ধরে।

বন্ধুত্ব হল এমন একটি অনুভূতি যা শিশুদের মধ্যে তৈরি হয় সেই সময় থেকে যখন তারা ভালোভাবে নিজেকে প্রকাশ করতেও শেখে না। কোনও বিশেষ খেলনার প্রতি শিশুদের আকর্ষণ আসলে এক ধরনের বন্ধুত্বই। তবে আমেরিকান সোশিওলজিক্যাল রিভিউয়ের রিপোর্ট বলছে, গত ২০ বছরে সারা পৃথিবীতে বিশ্বস্ত বন্ধুর সংখ্যা গড়ে এক-তৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে।

রিপোর্ট বলছে, বেশিরভাগ মানুষেরই জীবনে সর্বাধিক দু’জন প্রিয় বন্ধু থাকে। কর্মস্থলে বন্ধুত্ব খুবই বিরল। সহকর্মী আর বন্ধু কখনওই সমার্থক নয়। সমীক্ষা বলছে, ১৯৮০ সালের পরে যাঁদের জন্ম তাঁদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ মানুষ পদোন্নতির জন্য সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্ব ত্যাগ করতে রাজি।

ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি বন্ধুবৎসল হয়। গবেষণা বলছে, ছেলেরা বন্ধুদের চেয়েও বেশি মূল্য দেয় পারিবারিক সম্পর্কগুলিকে। অ্যানথ্রোপলজিস্ট রবিন ডানবারের বক্তব্য, প্রেম প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে অন্ততপক্ষে দু’টি বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট করে। ছেলে হোক বা মেয়ে, প্রেমে পড়ার কিছুদিনের মধ্যেই তার ঘনিষ্ঠতম বন্ধুদের দু’জনকে সে হারায়।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার মধ্যে কোনও রকম যৌন চাহিদা ছাড়াই নিছক বন্ধুত্ব অত্যন্ত বিরল। গবেষণা বলছে, সাধারণ বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও ৮৮ শতাংশ পুরুষ তাদের বান্ধবীদের প্রতি শারীরিকভাবে আকৃষ্ট।

Somoresh Sarkar

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।