চিনে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বন্দিশিবিরে উইঘুর মুসলিমরা
বেইজিং: চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের সংশোধনের জন্য পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ বন্দিশিবির গড়ে তুলেছে কর্তৃপক্ষ। আঞ্চলিক রাজধানী উরুমচির কাছেই দাবাংচেংয়ে এরকম একটি শিবিরে সম্প্রতি ব্যাপক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এই শিবিরটিতে কমপক্ষে এগারো হাজার বন্দীকে রাখা যাবে। অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক একটি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান এ কথা জানিয়েছে, তবে এর প্রকৃত ধারণক্ষমতা এক লাখেরও বেশি হতে পারে।
চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা পশ্চিম শিনজিয়াং অঞ্চলে বিনাবিচারে লাখ লাখ মুসলিমকে আটকে রেখেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব শিবিরে লোকজনকে জোর করে আটকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু চিনের বক্তব্য- এখানে উইঘুরদের শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়ার মধ্যে দিয়ে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থা দমন করা হয়।
‘Vocational education and training centres’ in China’s far west have come under international scrutiny, rights activists describing them as political re-education camps holding as many as one million ethnic Uighurs and other Muslim minorities https://t.co/gP0NHC1ngB #Xinjiang pic.twitter.com/IKPZBKmzNm
— AFP news agency (@AFP) 24 October 2018
দাবাংচেংয়ে যে শিবিরটি গড়ে তোলা হয়েছে, তা ২০১৫ সালেও ছিল একটা ফাঁকা জায়গা। কিন্তু তিন বছর পরে একই জায়গার উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে সেখানে এক বিশাল দেয়ালঘেরা স্থাপনা। এর চারদিকে দু’কিলোমিটার দীর্ঘ দেয়াল, রক্ষীদের জন্য তৈরি হয়েছে ১৬টি চৌকি। ভেতরে গড়ে উঠছে অনেকগুলো বিশাল বিশাল চারতলা ভবন।
শিনজিয়াংএ এরকম অনেকগুলো কারাগারের মতো স্থাপনা তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছরে। এখানে সাংবাদিকদের পক্ষে কারও সাথে কথা বলা প্রায় অসম্ভব। শিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের সংখ্যা ১ কোটিরও বেশি। তাদের সাথে মধ্য এশিয়ার জনগোষ্ঠীরই মিল বেশি, চিনের সংখ্যাগরিষ্ঠ হ্যান জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের সংস্কৃতির অনেক তফাৎ।
গত এক দশকে শিনজিয়াংয়ে দাঙ্গা, আন্তসম্প্রদায় সহিংসতা, আক্রমণ এবং পুলিশি ব্যবস্থার কারণে এখানে শত শত লোক নিহত হয়েছে। বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে একটি আক্রমণের ঘটনায় দু’জন এবং কুনমিংয়ে উইঘুরদের ছুরিকাঘাতে ৩১ জন নিহত হবার দুটি ঘটনা চিনের শাসকশ্রেণীকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। এরপর শিনজিয়াংয়ে নানা রকম বিধিনিষেধ জারি হয়েছে।
ইসলামী রীতিনীতি পালন- যেমন পুরুষদের দাড়ি রাখা, মহিলাদের হিজাব পরা, শিশুদের ধর্মশিক্ষা বা ইসলামী শোনায় এমন নাম রাখা- এগুলো সীমিত করতে নানা আইনী পদক্ষেপ বলবৎ হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের রোজা রাখা বা মসজিদে যাওয়া নিষিদ্ধ।