বাংলাদেশের ভোলায় হিন্দুদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর
ঢাকা: ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহম্মদ (সঃ) কে কটুক্তির অভিযোগে বাংলাদেশের ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিনে সহিংস বিক্ষোভ ও পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ পুলিশসহ দুই শতাধিক। এই সংঘর্ষের ঘটনার কিছু পরই সেখানকার হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মন্দির এবং বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা। এই হামলায় মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামের নবীকে কটুক্তি করার অভিযোগকে ঘিরে বোরহানউদ্দিনে রবিবার সকালে বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একটি সমাবেশে আসা মুসল্লিদের সাথে এক পর্যায়ে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ পুলিশসহ দুই শতাধিক।
এই বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশে গত কয়েকদিন অনেক আলোচনা চললেও, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা, মন্দিরে হামলার এসব খবর বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে খুব একটা উঠে আসেনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঐ সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে নেবার পথে বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানকার হাসপাতাল পাড়া বলে পরিচিত একটি এলাকায় হামলা চালায়। শুরুতে বাজারে একজন হিন্দু ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। এরপর সেখানকার একটি মন্দিরে ভাংচুর করা হয়। মন্দিরে হামলা চালিয়ে সবগুলো প্রতিমার মাথা ভেঙে ফেলে হামলাকারীরা।তছনছ করে মন্দিরের প্রধান মণ্ডপ, মন্দির চত্বরেই ভিন্ন মণ্ডপে কালী প্রতিমা ভাংচুর করে। এছাড়া মন্দিরের ভেতরের আসবাবপত্র, এবং মন্দিরের ভেতরের রান্নাঘরেও ভাংচুর করে হামলাকারীরা।
এরপর একই এলাকার ৮টি বাড়িতে হামলা চালায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এর মধ্যে দুইটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। পুড়িয়ে দেয় একটি মোটরসাইকেল। হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের একজন লক্ষ্মী রানী দে বলেন, আমার বাড়িতে যখন হামলা চালায়, তারা আমার ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, ঘরের ভেতরে খাটসহ অন্যান্য আসবাবপত্রেও আগুন দেয় তারা। খালি আগুনই দেয়নি, তারা লুটপাটও চালিয়েছে ঘরে।

লক্ষ্মী রানীর অভিযোগ, হামলাকারীরা তার ঘরে লুটপাট চালিয়ে নগদ ১০-১৫ টাকা হাজার নিয়ে যায়। বোরহানউদ্দিন বাজারে শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম নামক মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। সেখানে গত শনিবার কার্তিক-ব্রত নামে মাসব্যাপী এক উৎসব শুরু হয়। এখন অবস্থার প্রেক্ষাপটে সে উৎসব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।