বাংলাদেশে এবার বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর
ঢাকা: এবার ফের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলো বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করলো দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়াতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির কয়াগ্রামে (বর্তমানে কুষ্টিয়া) জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে বাংলাদেশে ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন করছে ইসলামপন্থী কয়েকটি সংগঠন।
ইসলামপন্থী সংগঠনের সমাবেশ ভাস্কর্যের বিরোধিতায় বক্তব্যের পর কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে আটক করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়ে পুলিশ বলছে, কলেজের গেটের পাশে আবক্ষ ভাস্কর্যটি ছিলো এবং মধ্যরাতে সেটির মুখের এক পাশে ও নাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বাঘা যতীন। বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের নেতা ছিলেন তিনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছুদিন আগে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জার্মান থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র বলে পরিচিত ‘জার্মান প্লট’ তাঁরই মস্তিস্কপ্রসূত। সশস্ত্র সংগ্রামের এক পর্যায়ে সম্মুখযুদ্ধে উড়িষ্যার বালেশ্বরে গুরুতর আহত হন তিনি এবং বালাসোর হাসপাতালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার হয় রক্তবমি হচ্ছিল তাঁর। তখনও তিনি হেসে বলেন: এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে।

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।

