পুজো মণ্ডপে ‘আজানের সুর’, এফআইআর দায়ের করা হল বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির বিরুদ্ধে
কলকাতা: বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজো মণ্ডপে ‘আজানের সুর’ কেন ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন শান্তনু সিং নামে এক আইনজীবী। পুজো কমিটির সম্পাদক-সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি। আইনজীবী শান্তনু সিংয়ের অভিযোগ, পুজো মণ্ডপে বাজছে আজান। আর তাতেই হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
এদিকে পুজো উদ্যোক্তারা পালটা প্রতিক্রিয়া, কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়নি। তাঁরা বলছেন, সব ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতেই তাঁরা এবারের পূজার থিম করেছেন। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে, আমরা এক, একা নই। সেই সূত্রে মণ্ডপ সজ্জায় যেমন হিন্দু-ইসলাম-খৃষ্টান সব ধর্মের নানা মোটিফ তুলে ধরেছেন, তেমনই থিম সঙ্গীত হিসাবে যা মণ্ডপে বাজানো হচ্ছে, সেখানেও চন্ডীপাঠের সঙ্গে আজান এবং বাইবেল পাঠ আর চার্চের ঘন্টাধ্বনি ব্যবহার করেছেন।
#WATCH Kolkata’s Beliaghata 33 Pally Durga puja pandal plays recording of ‘Azaan’, a Hindu mantra and church bells, to promote communal harmony. #Kolkata pic.twitter.com/aD43HpbyWK
— ANI (@ANI) October 7, 2019
পুজো কমিটির সম্পাদক সুশান্ত সাহা বলেন, আমাদের মণ্ডপ সজ্জার অঙ্গ হিসাবে যে থিম মিউজিকটা চালাচ্ছি, সেখানে কিন্তু আজান নেই শুধু! একই সঙ্গে চন্ডীপাঠ যেমন আছে, তেমনই বাইবেল থেকে পাঠও রয়েছে আজানের সঙ্গে। আমরা একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছি – সেটা হল সম্প্রীতির বার্তা।
আইনজীবী তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি বলেন, আমি যখন বেলেঘাটার ওই মণ্ডপে যাই, তখন শুনতে পাই আল্লাহু-আকবর ধ্বনি বাজছে। কোনও চার্চে ক্রিসমাস ক্যারলের সময়ে নিশ্চই গায়ত্রী মন্ত্র বাজানো হবে না, অথবা ঈদের দিন কোনও মসজিদে নিশ্চয়ই হনুমান চালিসা পাঠ হয় না! আমি চাইও না সেরকমটা হোক – তাতে শুধু অশান্তিই বাড়বে। সবাই নিজের মতো করে নিজের ধর্ম পালন করুক না কেন!
জ্যোতি তিওয়ারি আরও বলেন, দুর্গাপূজার প্রথমেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়, অর্থাৎ পূজার চারদিন সেটা হিন্দুদের কাছে মন্দিরের সমতূল্য। সেখানে আজান বা অন্য যে কোনও ধর্মের ধ্বনি কেন বাজানো হবে? থিমের নামে যা খুশি তো করা যায় না!